ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মেয়র আব্বাস কারাগারে, ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২১
মেয়র আব্বাস কারাগারে, ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

রাজশাহী: রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার বিতর্কিত মেয়র আব্বাস আলীকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে তাকে বোয়ালিয়া থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আদালতে তোলা হয়।

পরে আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে নিয়ে রাজশাহী পৌঁছায় বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। বুধবার (১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানী ঢাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন- ১ ডিসেম্বর রাতে র‌্যাবের কাছ থেকে আব্বাসকে গ্রহণ করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ।

এরপর তাকে নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে তাকে নিয়ে রাজশাহী পৌঁছায় পুলিশ। এরপর বলে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। তবে এর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। রোববার (৫ ডিসেম্বর) রিমান্ড আবেদনের শুনানি হতে পারে। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়।

জাতির জনকের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ২৩ নভেম্বর রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই মামলা দায়ের করা হয়। পরে পুলিশ সদর দফতরের অনুমোদনের পর ২৪ নভেম্বর মামলাটি গ্রহণ করা হয়। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল মোমিন বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি রেকর্ড করে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাবুল আলমকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এরপর রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী গা ঢাকা দেন। তিনি গ্রেফতার এড়াতে দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই উদ্দেশ্যে ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। বুধবার ভোরে তাকে আটকের পর এসব তথ্য জানান র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‌্যাব জানায়, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির ঘটনায় এই মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। তার কাছ থেকে পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজশাহী শহরের প্রবেশমুখে জনকের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। সেই মামলায় গ্রেফতার এড়াতে ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি কোনো ডিজিটাল ডিভাইস বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিলেন না। তাই তিনি ধরা পড়ছিলেন না।

সম্প্রতি কাটাখালীর পৌর মেয়রের একটি কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ২২ নভেম্বর রাত থেকে ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই অডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
আব্বাস আলী প্রাথমিকভাবে ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডটি তার বলে স্বীকার করেছেন।


আব্বাস আলী রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে টানা দুই মেয়াদে মেয়রের দায়িত্ব আছেন। তাকে দলীয় পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। এছাড়া মেয়র আব্বাস আলীকে অপসারণে অনাস্থা এনেছেন কাউন্সিলররা।

এই অনাস্থা প্রস্তাব সংবলিত অপসারণের আবেদনপত্র এরইমধ্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছেন তারা। তিনি পৌর মেয়র পদও হারাচ্ছেন বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২১ 
এসএস /এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।