ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘তিস্তার পানি বণ্টন এক পক্ষের লাভের বিষয় নয়’

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
‘তিস্তার পানি বণ্টন এক পক্ষের লাভের বিষয় নয়’

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্র এখনও রয়েছে, এটি কেবল এক পক্ষের লাভের বিষয় হতে পারে না।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘তিস্তা নদী অববাহিকা: সংকট উত্তরণ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ৭ম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনের (ভার্চ্যুয়াল) শেষ দিনে তিনি একথা বলেন।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, মানুষ ও প্রকৃতি ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি মাথায় রেখে সমাধানের পথ বের করতে হবে। নদীর পানি শাসনের ক্ষেত্রে প্রকৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে।

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, মানুষ নদীর সঙ্গে বসবাস করে, কিন্তু সাধারণত নদী সংক্রান্ত আলোচনায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পানি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ধারণাট স্থানীয় সম্প্রদায়ের লোকদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এসেছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সম্প্রদায়-ভিত্তিক পানি জাদুঘরটি ২০১৪ সালে একশনএইড বাংলাদেশ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে। এই পানি জাদুঘর এখন আইডিয়া জেনারেশন, নদী-ভিত্তিক তৃণমূল মানুষের কণ্ঠস্বর, শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম এবং গ্লোবাল ওয়াটার মিউজিয়ামের সঙ্গে নেটওয়ার্কিং এর একটি কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

দ্য গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব ওয়াটার মিউজিয়ামের নির্বাহী পরিচালক ড. এরিবার্তো ইউলিস বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, তিস্তা নদী অন্যান্য নদীর মতোই পরিবর্তনের প্রতীক। পানি সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সহযোগিতা ও ভালো অনুশীলন প্রয়োজন। যে কোনো পানি জাদুঘর তৈরি করার সময় আমাদের কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথাই নয়, সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপের কথাও মাথায় রাখা উচিত।

সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরিয়াল ফেলো শহীদুল হক বলেন, আলোচনার ক্ষেত্রে আমরা তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আরও ভালো সহযোগিতার পথ খুঁজে পেতে পারি। আন্তর্জাতিক স্টেকহোল্ডার, জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আরও মিথষ্ক্রিয়া দরকার। জলবায়ু পরিবর্তন বিবেচনা করেও ভিন্ন ন্যারেটিভে এগিয়ে যাওয়া উচিত।

অ্যাসোসিয়েশন অব ভলান্টারি অ্যাকশন ফর সোসাইটির (আভাস) নির্বাহী পরিচালক এবং একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ পরিষদের সদস্য রহিমা সুলতানা কাজল তার বক্তব্যে তুলে ধরেন কীভাবে একশনএইড বাংলাদেশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত পানি জাদুঘর প্রান্তিক মানুষের অধিকার রক্ষার মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।

রহিমা সুলতানা কাজল বলেন, নদীর প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করার ফলে নদী কেন্দ্রিক সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তথাকথিত উন্নয়ন করতে গিয়ে নদীর পানির সুষম বণ্টন হচ্ছে না, যার ফলে ব্যবহারযোগ্য পানির অভাব দেখা দিয়েছে। নদীর পানি ব্যবহার নিয়ে যে সব আইন রয়েছে, সেই আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না।

কাউনিয়া কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান শ্বাশ্বত ভট্টাচার্য বলেন, নদী মরে গেলে নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জনজীবনও মরে যায়। সেই জনজীবন যদি নদী কেন্দ্রিক জীবিকা ও শ্রম থেকে বিচ্যুত হয় ও স্বাভাবিক কার্যক্রমের মধ্যে না থাকে তাহলে হাজার বছরের লালিত সংস্কৃতিও নষ্ট হয়ে যায়।

সম্মেলনের শেষ দিনে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন নেপাল আইএসইটির উপদেষ্টা অজয় দীক্ষিত; লিভিং ওয়াটারস মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও  ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের অ্যাডজান্ট প্রফেসর ডা. সারা আহমেদ এবং এওএসইডিও এর নির্বাহী পরিচালক শামীম আরফিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
টিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।