ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইসি আইনের খসড়া সংসদে তোলার আগে আলোচনার প্রয়োজন ছিল

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
ইসি আইনের খসড়া সংসদে তোলার আগে আলোচনার প্রয়োজন ছিল

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগ আইনের খসড়া জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের আগে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অনেকেই। আবার খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার আগেই আইনটি নিয়ে ঢালাওভাবে সমালোচনার বিষয়টি বিরোধিতার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

সংবিধানে ইসি নিয়োগে (প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনার) আইন তৈরির জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে জোর দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসি নিয়োগ আইন তৈরির উদ্যোগ নেয় সরকার। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত খসড়া আইন মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। রোববার (২৩ জানুয়ারি) এই খসড়া আইন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে।

বিগত দুটি ইসি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশনের সদস্যদের বাছাই করেন। সেই আলোকেই এবার আইনটি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এই সার্চ কমিটি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ অনেকে সমালোচনা করছেন। তারা মনে করছেন, ১৪ দলীয় জোটের দলগুলো স্বাগত জানালেও বিষয়টি নিয়ে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। আবার কেউ কেউ ইসি নিয়োগ আইনের খসড়া সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে ঢালাও সমালোচনাকে ‘নেতিবাচক’ বলে উল্লেখ করছেন।

গত ১৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে সবার মতামত ও অংশগ্রহণের ভিত্তিতে ইসি গঠন করা হবে। এই ব্যবস্থাটি এখন পর্যন্ত দুইবার (২০১২ এবং ২০১৭) অনুশীলন করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী ইসি গঠিত হয়েছে। দুইবারই দেশের সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিয়েছেন। এমতাবস্থায়, এই রীতি এবং অভিজ্ঞতা থেকে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের আলোকে একটি আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে।

এর আগে ওইদিনই মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া অনুমোদন হয়। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সংবিধানের ১১৮(১)-এ বিধান আছে, রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিতে পারেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ আইনটি নিয়ে আসা হয়েছে। খুব বেশি বড় আইন নয় এটি। এ জাতীয় আইন যেহেতু আমরা অনুশীলন করে আসছি, সে অনুযায়ী এটা করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করতে একটা সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। অন্যান্য আইনে যেভাবে আছে ঠিক সেভাবেই এটি থাকবে। সার্চ কমিটি যোগ্য প্রার্থীদের নাম সুপারিশ করবে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বাংলানিউজকে বলেন, আইন করার উদ্যোগটি ইতিবাচক, স্বাগত জানাই। আইনের খসড়ায় কি আছে সেটা আমরা জানি না। ইসি গঠনে আমরা তো আইনই চাই, তবে আইনটি নিয়ে আগে থেকে আলোচনা করা উচিত ছিল। সংসদে উপস্থাপনের পর আলোচনার সুযোগ আছে। তবে সেটা থাকলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে যা উপস্থাপন করা হবে, সেটাই হয়তো পাস হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বাংলানিউজকে বলেন, আসলে আইনের খসড়া তো আর প্রকাশ করা হয়নি। তাই না জেনে কিছু বলা যায় না। যারা সমালোচনা করছেন আমি মনে করি না সেটা ঠিক। কারা ইসির দায়িত্ব পাবেন সেটা তো বাছাই করতে হবে। এটা নিয়ে যারা আগেই সমালোচনা করছেন তারা আইন বা নির্বাচন চান কি না সন্দেহ আছে।

এ বিষয়ে ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রাষ্ট্রপতির সংলাপে আমরা আইন প্রণয়নের কথা বলেছি। সরকার উদ্যোগ নিয়েছে এটা ইতিবাচক। কিন্তু আইনটা কি রকম হবে, ইসির নতুন সদস্যদের কারা বাছাই করবেন বা কাদের নিয়ে বাছাই কমিটি হবে সে বিষয়ে আইনি খসড়া তৈরির আগে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। আলোচনার মাধ্যমে হয়তো ভালো কোনো প্রস্তাব বেরিয়ে আসতে পারতো।

বাংলাদেশ সময় ১৯২৯, জানুয়ারি ২২, ২০২২
এসকে/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।