ঢাকা: সোমবার (২৪ জানুয়ারি) ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস। বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৬৯ সালের এই দিনটিেআমাদের মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা ভিত্তিক গণ-আন্দোলনের আদর্শকে ধারণ করে অগ্রসরমান সংগ্রামের পথপরিক্রমায় ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন এবং ১১-দফা ঘোষণা করেন। এই ১১ দফার মূল ভিত্তি ছিল বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬-দফা। ৬ দফা ভিত্তিক ১১ দফার দাবিতে ছাত্রসমাজের সমস্যাকেন্দ্রিক দাবি-দাওয়ার পাশাপাশি কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবিগুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ রাজবন্দিদের মুক্তি। ৬ দফা এবং পরবর্তীতে ১১ দফা কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয় ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান।
জনতার রুদ্ররোষ এবং গণঅভ্যুত্থানের জোয়ারে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব রাজনৈতিক নেতাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পতন ঘটে আইয়ুব খানের স্বৈরতন্ত্রের।
১৯৬৯-এর ৪ জানুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা কর্মসূচি গণঅভ্যুত্থানের পথ সৃষ্টি করে। ২০ জানুয়ারি শহিদ হন আসাদুজ্জামান আসাদ ৷ আসাদের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে সারাদেশে আন্দোলনের আগুন জ্বলে ওঠে। আর শহিদ আসাদের আত্মদানের পর ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি শোক পালনের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয় এই ২৪ জানুয়ারি।
এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে উঠে। গণঅভ্যুত্থানের বিজয়ের ধারাবাহিকতায় ৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। এর ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ছিনিয়ে আনে মহান স্বাধীনতা। ফলে বাঙালি জীবনে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্ব অপরিসীম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ২৩ জানুয়ারি, ২০২২
এসকে/এমএমজেড