ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অদ্ভুত জটিলতায় মেহেরা, ৩ বছরের ব্যবধানে জন্ম-বিয়ে-সন্তান প্রসব!

মামুনুর রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২
অদ্ভুত জটিলতায় মেহেরা, ৩ বছরের ব্যবধানে জন্ম-বিয়ে-সন্তান প্রসব!

নাটোর: জন্ম ১৯৭৭ সালে আর বিয়ে করেছেন ১৯৭৮ সালে এবং সন্তান প্রসব করেছেন পরের বছর ১৯৭৯ সালে। বয়স-বিয়ে আর সন্তান জন্ম দেওয়া নিয়ে এমন এক অদ্ভুত হিসাব জটিলতায় ঘুরপাক খাচ্ছেন মেহেরা খাতুন।

তিনি নাটোর সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে চাকরি করেন অফিস সহকারী পদে। বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগও রয়েছে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে। সে অনুযায়ী দাপ্তরিকভাবে তদন্ত করা হয়। তবে তদন্তে মেহেরা খাতুনের বয়স জালিয়াতির বিষয়টির প্রমাণ পাননি বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা নাটোরের জেলা রেজিস্ট্রার শফিকুল ইসলাম।
 
এরপরই মোহরার থেকে অফিস সহকারী পদে পদোন্নতি পান মেহেরা খাতুন।  

মেহেরা খাতুনের দাবি, তার জন্ম ১৯৭৭ সালে হলেও ১৯৭৮ সালে বিয়ের তথ্য ভুল ছিল। তার নামে বিয়ের যে কাবিনামা উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটি ছিল জাল। তিনি ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করেছেন ১৯৮৫ সালে। তার বিয়ের কোনো কাবিননামা হয়নি।  

মেহেরা খাতুনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৫ সালে তার বিয়ে হয়েছে। আর তা-ই যদি হয়, তাহলে ১৯৭৭ সালে জন্ম অনুযায়ী মাত্র আট বছর বয়সে তার বিয়ে হয়। তার দাবি, দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে প্রথম সন্তান হযরত আলীর জন্ম ভোটার তালিকায় ১৯৭৯ হলেও প্রকৃত জন্ম ৮৬ সালে। অর্থাৎ বিয়ের এক বছর পর মাত্র নয় বছর বয়সে মেহেরা প্রথম সন্তানের মা হন।

ভোটার তালিকায় মেহেরা খাতুনের দ্বিতীয় ছেলে আরিফুল ইসলামের জন্ম ১৯৮১ সালে এবং মেয়ে রঞ্জনা খাতুনের জন্ম ১৯৮৩ সালে। অথচ তিনি বিয়ে করেছেন ১৯৮৫ সালে।  

মেহেরা খাতুনের দাবি, তার সব সন্তানের জন্ম তারিখ ভোটার তালিকায় ভুল হয়েছে। তিনি জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদন করেছেন। তবে এ বিষয়টি নিয়ে নাটোর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অভ্যন্তরে বেশ আলোড়ন তুলেছে।

মেহেরা খাতুন বাংলানিউজকে জানান, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বিয়ে হয়ে যায়। এরপর তার সন্তানদের জন্ম হয়। এর মাঝেই পড়াশোনা চালিয়ে এসএসসি পাস করেছেন তিনি। বয়সের বিষয়গুলো সেভাবে খেয়াল করা হয়নি। এখন কেউ একজন তার পেছনে শত্রুতা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।

মেহেরা খাতুন ২০১৫ সালে টিসি মোহরার পদে নাটোরের লালপুর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে বয়স জালিয়াতির অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি তদন্ত করেন নাটোরের জেলা রেজিস্ট্রার শফিকুল ইসলাম নিজেই।  

তিনি বাংলানিউজকে জানান, তদন্তকালে নির্বাচন অফিস ও তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সে অনুযায়ী বয়স জালিয়াতির প্রমাণ তিনি পাননি।  

তবে কবে তার বিয়ে হয়েছে, বিয়ের সঙ্গে তার জন্ম, সন্তানদের বয়সের মিল-অমিলের বিষয়টি ব্যক্তিগত বলে জানান জেলা রেজিস্ট্রার শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে চাকরিতে যোগদান করেন মেহেরা খাতুন। আর এতোদিন পর অভিযোগ করাটাও প্রশ্নবিদ্ধ।

বাংলদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, ফেব্রয়ারি ০১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।