ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলায় লাগবে অনুমতি!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২
বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলায় লাগবে অনুমতি!

সাভার (ঢাকা): করোনার ভাইরাসের সংক্রমণের হার ফের বেড়ে যাওয়ায় সরকার কিছু বিধিনিষেধসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এতে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে দিন পার করছে।

স্কুল বা কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা চায় তাদের ছেলে-মেয়েরা বন্ধের এই সময়টি খেলাধুলা বা বাড়িতে বসে পড়াশোনা করেই পার করুক। কারণ এই সময়টি শিক্ষার্থীদের অন্যমনস্ক হওয়ার প্রবনতা বেশি থাকে৷

তবে এমন বিধিনিষেধের ভেতর সাভারের আশুলিয়ার একটি স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের মাঠে একটি উদ্ভট বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। যাতে করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

মঙ্গলবার (০১ ফেব্রুয়ারি) স্কুলটিতে গিয়ে বিজ্ঞপ্তিটি দেখা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে লিখা হয়েছে, সর্ব সাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, অনুমতি ব্যতিত বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা, ড্রাইভিং, জনসমাবেশ, গাড়ি পার্কিং, গবাদিপশু চরানো নিষিদ্ধ করা হলো। নির্দেশক্রমে স্কুলটির সভাপতি। ' বিজ্ঞপ্তিতে আরও দুটি ফোন নাম্বারও দেওয়া হয়েছে৷

সম্প্রতি আশুলিয়ার বাঁশবাড়ি ডগরতলিতে অবস্থিত 'হাজী জান মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এমন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সেখানে বাঁশবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে আরেকটি প্রাইমারি স্কুলও আছে।

করোনার ভেতর যখন কোমলমতি শিশুদের খেলার জন্য অভিভাবকরা মাঠে খুঁজছে৷ এমন সময় এই বিজ্ঞপ্তি উদ্ভট ও ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ বলে ভাবছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীরা৷ বিষয়টি নিয়ে পোস্টও করেছেন অনেকে।  

তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছেন, মূলত খেলাধুলা বন্ধ করার জন্য এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি৷ নিয়ন্ত্রিত খেলাধুলা ও তাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা যেন খেলাধুলায় অগ্রাধিকার পায় সেজন্য কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ অনুমতির কথা বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিটির সমন্বয়ক ও বাঁশবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মুকসেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এই বিজ্ঞপ্তিটি দিয়েছি প্রায় ১০ দিন আগে। এই বিজ্ঞপ্তিটি দেওয়ার কারণ হচ্ছে বিদ্যালয়ের মাঠটি সুরক্ষিত রাখা। অনেক সময় দেখা যায় মাঠের ভেতর অযথা গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। আবার জনসমাবেশ করা হয়৷ এতে আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব পরে।

খেলাধুলা করতে অনুমতি নিতে হবে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের এলাকাটা শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা। এখানে শুক্রবার হলেই বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা খেলতে আসে। তারা খেলতে আসলে ৫-৭টা গ্রুপের ভেতর ঝামেলা লেগে যায়। কে আগে খেলবে কে পরে খেলবে এ নিয়ে। শুধু তাই নয় এছাড়াও বিভিন্ন দলের সঙ্গে মারামারিও ঘটনাও ঘটেছে এই মাঠে। যে বিচার চেয়ারম্যান পর্যন্ত চলে যায়। এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এই মাঠে সবাই খেলবে, মাঠ তো খেলার জন্যই। কিন্তু খেলতে এসে মাঠ নিয়ে মারামারি যেনো না করে সে জন্য আমাদের সঙ্গে কথা বলে খেলতে হবে। সবাইকে সুযোগ দেওয়া হয় খেলার জন্য। কেউ আগে খেলে কেউ পরে। আর মাঠের পরিচ্ছন্নতা ও সব কিছু দেখাশোনার জন্য একজন ব্যক্তি রাখা হয়েছে। মাঠে যারাই খেলুক তারা সেই ব্যক্তিকে ২০০ বা ১৫০ টাকা দিয়ে খেলে। এতে ওই ব্যক্তিরও একটি উপার্জনের মাধ্যম হয়েছে৷

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
এসএফ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।