ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পোড়াদহ মেলায় চলছে মন মাতানো হোন্ডা খেলা

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২
পোড়াদহ মেলায় চলছে মন মাতানো হোন্ডা খেলা মেলায় চলছে মন মাতানো হোন্ডা খেলা। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: ঐতিহ্যবাহী বগুড়ার পোড়াদহ মেলায় চলছে মন মাতানো হোন্ডা খেলা। চারদিক কাঠ দিয়ে ঘিরে মাটির ওপর বানানো হয়েছে কূপ।

সেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দি রাশিয়ান মৃত্যুকূপ’। কথাটা শুনতে অদ্ভুত লাগলেও আয়োজনটা এমনই। তবে, সেটি হাতি না এটি একটি খেলা।

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বগুড়ার গাবতলীতে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় মাঠে দেখা যায়, মৃত্যুকূপের মাঝখানে দুটি রং চটা টোপ খাওয়া মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকার। ৩০ টাকায় কাটা টিকিটে ১০ মিনিট উপভোগ করা যাবে এ খেলা। কূপটি তৈরিতে লোহার অ্যাঙ্গেল, খুঁটি, বাঁশ, নাট-বল্টুসহ আনুষাঙ্গিক আরও অনেক কিছুর ব্যবহার রয়েছে। বড় সড় জায়গা নিয়ে বানানো এই মৃত্যুকূপে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল নিয়ে খেলা দেখানো হয়। খেলাটি যখন চলে তখন দর্শককে তা দমবন্ধ করে দেখতে হয়। চালক অত্যন্ত দক্ষভাবে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে পুরো ১০ মিনিট মৃত্যুকূপে গাড়ির ঘুর্ণি ছোটান। এ জন্যই বলা হয় ‘মৃত্যুকূপে ১০ মিনিট’।

খেলা দেখতে দর্শকরা কাঠের দুইটি সিঁড়ি বেয়ে মৃত্যুকূপের ওপরে চারপাশে কাঠের তৈরি ছাদের মত অংশে দাঁড়িয়ে যান। সময় হওয়া মাত্র চালক শামীম রেজা প্রথমে মোটরসাইকেলে ওঠে পড়েন। মাইকে ঘোষণা দেওয়া মাত্র মোটরসাইকেল চালু করে সেই মৃত্যুকূপের চারপাশে ঘুরতে থাকেন। এর পরপরই তার ভাই শাহীন অন্য একটি মোটরসাইকেল নিয়ে একি কায়দায় মৃত্যুকূপে ছুটতে থাকেন। তারা কখনো কখনো এক হাত ছেড়ে কখনোবা দুই হাত ছেড়ে নানা কসরত দেখাতে থাকেন। ফটফট শব্দ তুলে মোটরসাইকেল ঘুর্ণি খেতে থাকে তীব্র গতিতে। কিছুক্ষণ মোটরসাইকেল চালানোর পর এবার শুরু হয় প্রাইভেটকারের ঘূর্ণি। একইভাবে মৃত্যুকূপ একাই দাপিয়ে বেড়ান শামীম রেজা। বেপরোয়া গাড়ি চালানোটাই দর্শকদের আনন্দের খোরাক।

শামীম ও শাহীন জয়পুরহাটের সদর উপজেলা থেকে এসেছেন। ১২ বছর ধরে জীবনবাজী রাখা এই খেলা তিনি খেলে আসছেন বিভিন্ন মেলা আর উৎসব আয়োজনে। এ দিয়েই জোটে তার ও পরিবারের জীবিকা। ‘দি রাশিয়ান মৃত্যুকূপ’ এ দলটি পরিচালনা করেন বগুড়া সদর উপজেলার কলনী এলাকার মিজানুর রহমান ঝন্টু। শামীম ও শাহীন দুই ভাই বাংলানিউজকে জানান, এটা কোন যাদু বা মন্ত্র বিদ্যা নয়। শুধু দক্ষতা। চাচাতো ভাই সম্রাট মাহফুজের কাছ থেকে এ খেলা রপ্ত করেছেন তারা। এজন্য তাদের অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে। জীবনকে অনেকটা হাতের মুঠোয় নিয়ে এ খেলা খেলতে হয় তাদের। এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটি খেলা। পুরো বিষয়টি দক্ষতা ও ক্ষিপ্রতার ওপর নির্ভর করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।