ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ঘরের সঙ্গে কর্মসংস্থান, পাল্টে গেল ভ্যানচালক রুমার জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২
ঘরের সঙ্গে কর্মসংস্থান, পাল্টে গেল ভ্যানচালক রুমার জীবন

পিরোজপুর: মাত্র ছয় বছর বয়সে তাকে পিরোজপুর শহরের রাস্তায় ফেলে যান স্বজনরা। সেই থেকে ফুটপাতে বেড়ে ওঠা।

ভিক্ষা করে জীবন চালিয়েছেন। ভ্যান চালিয়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছিলেন এই নারী।  

বিয়ের সাড়ে সাত বছর পর তার এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। নাম রাখেন মো. ইব্রাহিম। এখন ওই ছেলের বয়স ৫ বছর। কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো না রুমার। দুই বছর আগে স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে রুমা ও তার ছেলেকে ছেড়ে চলে যান। আবার একা হয়ে যান রুমা। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। মানুষের কটু কথা ও মনের দুঃখে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন একাধীকবার। কিন্তু ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে ফিরে আসেন। শেষে শুরু করেন ভিক্ষা। ভিক্ষা করে ফুটপাতে থেকে জীবন চলছিল তার। ভিক্ষা করে যখন তিন বেলা খাবার জুটছিল না তখন ভ্যান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন রুমা। ছেলেকে ফুটপাতে রেখে ভ্যান চালাতে শুরু করেন। ভ্যান চালিয়ে একবেলা খাবার খান। অনেক সময় না খেয়ে থাকতেন। ফুটপাতেই বস্তা গায়ে দিয়ে ঘুমাতেন। লোকে কটু কথা বললেও সহ্য করতেন। বিষয়টি নজরে আসে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদের।  

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে টোনা ইউনিয়নের লখাকাঠী গ্রামের রুমা বেগমের ঘরের পাশেই তার নিজস্ব কর্মসংস্থানের উদ্দেশে তৈরি একটি দোকানের উদ্বোধন করেন পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ। সদর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অর্থায়নে ওই দোকান পেয়েছেন রুমা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি ফারজানা আক্তার, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান, টোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইমরান আলম খান হারুনসহ আরও অনেকে।

পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানান, রুমা বেগম শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি একজন স্বামী পরিত্যক্তা নারী। তার ঘর বা আশ্রয় কিছুই ছিল না। তাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর দেওয়া হয়েছে। ঘরের পাশেই কর্মসংস্থানের জন্য তাকে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ও সদর উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের অর্থায়নে একটি দোকান দিয়ে মালপত্র কিনে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তিনি এটি পরিচালনা করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন এবং তার আর কষ্ট করে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।