ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হাতি নিয়ে রাস্তায় চাঁদাবাজি 

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
হাতি নিয়ে রাস্তায় চাঁদাবাজি 

কেরানীগঞ্জ, ঢাকা: হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ-নবাবগঞ্জ রোডের চালক ও যাত্রীরা। চলন্ত বাস-ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায় এখানে নিত্যদিনের ঘটনা।

চাঁদার কবল থেকে মুক্ত নয় রাস্তার পাশের দোকানিরাও। হাতিকে টাকা দেওয়া ছাড়া কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনা সামনে দিয়ে। আবার টাকা কম দিলেও না নেওয়ার অভিযোগ হাতি পরিচালকের বিরুদ্ধে। আর এতে ভোগান্তিতে আছে এই রোডে চলাচলকারী চালক ও যাত্রীরা।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেরানীগঞ্জ উপজেললার কদমতলী, জিনজিরা, কোনাখোলা, শাক্তা, রোহিতপুর এলাকায় হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করছেন এক যুবক। এক সপ্তাহ আগেও এই রোডে চাঁদাবাজি করতে দেখা গেছে রাসেল নামে এই যুবককে।

জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম সড়কের মাঝে যানবাহন থামিয়ে ইচ্ছে মতো চাঁদা আদায় করছিলেন তিনি। চাঁদা আদায় ছাড়া কোনোভাবেই তার বাধা অতিক্রম করতে পার ছিলনা চালকরা। কেউ কেউ হাতিকে এড়িয়ে যেতে দ্রুতগতিতে বিপদজনকভাবে রাস্তার পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যেতেও দেখা গেছে। চাঁদা না দিলে হাতি দিয়ে ভয় দেখানোর অনেক অভিযোগও পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী সিএনজি চালক মনির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ৩০ টাকার ক্ষেপে ১০ টাকা চাঁদা দিলাম, আর এটাই শেষ না, আবার দেখা হলে আবারও দিতে হবে। আমরা ব্যস্ত সড়কে বিপদজনক হাতি দেখতে চাইনা। বনের প্রাণী বনে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ঢাকার শ্যামলী থেকে আসা এক প্রাইভেটকারের মালিক আরিফ বাংলানিউজকে জানান, তারা শ্যামলী থেকে নবাবগঞ্জ যাচ্ছিলেন। পথে মধ্যে শাক্তার একটি এলাকায় হাতিওয়ালা তার কাছ থেকে ১০০ টাকা আদায় করে ছেড়েছে। প্রথম ২০ টাকা দিলেও তা নেয়নি, উল্টো ড্রাইভারকে মারতে আসেন যুবক। ১০০ টাকার কম নাকি হবে না। আর আমার বাচ্চাও ভয় পেয়েছে হাতি দেখে।

লাখিরচর গ্রামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, হাতিকে টাকা না দিয়ে দ্রুত সামনে চলে যেতে চেয়েছিলাম। হাতির ভয়ে যাত্রীরা হুড়াহুড়ি করতে গিয়ে আমার অটোটা প্রায় পড়েই গিয়েছিল। আমরা গরীব মানুষ, ১০ টাকা কামাতে গিয়ে যদি ২০ টাকা চাঁদা দিতে হয় আমরা যাবো কোথায়?

তবে হাতির পরিচালক এটাকে চাঁদাবাজি মানতে নারাজ। তিনি বলন, সার্কাস বন্ধ থাকায় হাতিকে লালন-পালন করতে মানুষের কাছ থেকে ১০-২০ টাকা চেয়ে নিচ্ছেন। কেউ না দিলে তার ব্যাপারে কোনো জোরাজুরি নেই।

এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সালাম মিয়াকে ফোন করা হলে তিনি জানতে চান হাতিটি কোথায় আছে? এবং এখনই ফোর্স পাঠাচ্ছেন বলেও তিনি প্রতিবেদককে জানান। তবে শেষ পর্যন্ত হাতিটি নিরাপদেই কেরানীগঞ্জ ত্যাগ করে নবাবগঞ্জ ঢুকতে দেখা গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, হাতি বা বন্যপ্রাণী নিয়ে সড়কে চাঁদাবাজি করা দুঃখজনক এবং অমানবিক। শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।