ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চা দোকানিকে গরম পানি নিক্ষেপ, অভিযুক্ত আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২২
চা দোকানিকে গরম পানি নিক্ষেপ, অভিযুক্ত আটক চা দোকানি আলমগীর

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে গরম পানি ছুড়ে আলমগীর হোসেন নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী চা দোকানিকে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জহির আহম্মেদ রিপন ভূঁইয়াকে আটক করেছে পুলিশ।

 

দোকানের বাকি টাকা চাওয়ার জেরে রোববার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের কাজিদিঘীরপাড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাটি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাজানি হলে রাতেই সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের হামছাদী গ্রাম থেকে অভিযুক্ত রিপনকে আটক করে। সে নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও কোন পদপদবী ছিল না। এলাকায় অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।  

প্রতিবন্ধী আলমগীর রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সাইচা গ্রামের বাসিন্দা ও কাজিরদিঘীরপাড় বাজারের চা দোকানি।  

আটক রিপন সদর উপজেলার হামছাদী গ্রামের একরাম উদ্দিন ভূঁইয়া বাড়ির তোফায়েল আহম্মেদ কালু ভূঁইয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, রোববার সন্ধ্যায় দোকানের পাওনা টাকা চাইলে কথিত আওয়ামী লীগ নেতা রিপন গরম পানির কেতলি ছুড়ে মরেন দোকানির গায়ে। এতে আলমগীরের শরীরের একাধিক স্থান ঝলসে যায়। তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

আহত চা দোকানি আলমগীর হোসেন ও এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ১৮ বছর ধরে তিনি কাজিরদিঘীরপাড় বাজারে চা দোকানের ব্যবসা করে আসছেন। কয়েক বছর ধরে রিপন প্রায়ই দোকানে এসে চা-সিগারেটসহ বিভিন্ন খাবার খেত। টাকা চাইলে পরে দেবে বলে চলে যায়। মাঝে মাঝে দলবল নিয়ে এসে খেয়ে চলে যায়। এরপর থেকে আর তার বাকির হিসেব রাখা হয় না।  

রোববার সন্ধ্যায় দোকানে এসে রিপন চা-সিগারেট নেয়। চা-সিগারেট পান করা শেষে তিনি চলে যাচ্ছিলেন। এসময় তাকে ডেকে আলমগীর টাকা চান। কিন্তু রিপন টাকা দেবে না বলে জানায়।  

এতে পরবর্তীতে তাকে আলমগীর দোকানে না আসার জন্য বলেন। এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বাদানুবাদের একপর্যায়ে গ্যাসের চুলার ওপর থাকা গরম পানিসহ চায়ের কেতলি তিনি আলমগীরের শরীরে ছুড়ে মারে। দ্বিতীয় কেতলি ছুড়ে মারার সময় আলমগীর তা হাত দিয়ে ধরে ফেলেন। এতে তার হাত, হাঁটু, পিঠ, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

আলমগীর বলেন, ১৯৯৬ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আমার বাম পায়ের গোড়ালিতে আঘাতপ্রাপ্ত হই। পরে সে পায়ের পাতা কেটে ফেলতে হয়েছে। এরপর থেকে চা দোকান চালিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই।  

ভূক্তভোগী চা দোকানি আলমগীরের মেয়ে রত্না আক্তার বলেন, ভয়ে আমরা মামলা করতে পারিনি। রিপন আমার বাবাকে ঝলসে দিয়েছে। পুলিশ তাকে আটক করেছে। এখন আমরা থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করবো।  

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসীম উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, অভিযুক্ত রিপনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে রিপনকে গ্রেফতার দেখানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।