ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

থ্রিলার বইয়ে আগ্রহ বাড়ছে তরুণদের

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২২
থ্রিলার বইয়ে আগ্রহ বাড়ছে তরুণদের ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: থ্রিলার বই বরাবরই রোমঞ্চকর। পুরো বইটা এক নিমিষে পড়ার ইচ্ছা জাগে।

মানুষকে বিমুগ্ধ করে রাখে। আমার কাছে গল্প-উপন্যাসের চেয়ে থ্রিলার বই পছন্দের।

সমসাময়িক থ্রিলারদের মধ্যে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেনেনি আমার ভালো লেগেছে। তাই বইমেলায় থ্রিলার টাইপ বইয়ের খোঁজ করছি। এভাবেই থ্রিলার বই নিয়ে নিজের অভিমত দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের আরিফুল ইসলাম।

শুধু আরিফ নয়, গল্প, উপন্যাস, কবিতার পাশাপাশি বর্তমানে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের থ্রিলার বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে বলে মনে করছেন প্রকাশকরাও।

শিখা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে থ্রিলার বই। বনানী কবরস্থান বইটা সর্বাধিক বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ব্ল্যাকমুনসহ আমাদের চারটি থ্রিলার বই রয়েছে। যা তরুণদের বেশি আকৃষ্ট করছে।

তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী মাহবুবুর রহমান রুমাত বাংলানিউজকে বলেন, তরুণ-তরুণীরা বর্তমানে থ্রিলার বইয়ের প্রতি বেশি ঝুকছে। বিশেষ করে কিশোরীরা, যারা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত তারা বেশি ভূতের গল্প, বিভিন্ন রোমাঞ্চকর বই ব্যাপকভাবে কিনছেন। আমাদের সাদমান সাঈদ চৌধুরীর মনশ্চক্ষু, মালিহা তাবাসসুমের অ্যাকিলিসের টেন্ডন নামের মেডিক্যাল থ্রিলার বই বেশি বিক্রি হচ্ছে।

আদর্শ প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আব্দুল মঈন খান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের থ্রিলারধর্মী বই কম। মাইন্ড ট্রাভেল নামে একটি বই আছে যা তরুণদের মধ্যে চাহিদা রয়েছে।

বইমেলার পাশাপাশি অনলাইনেও এসব থ্রিলারধর্মী বইয়ের চাহিদা টপ ক্যাটাগরিতে থাকছে। থ্রিলার প্রকৃতির বই হিমলুং শিখরের লেখক ইকরামুল হাসান শাকিল বলেন, আমার এই বইটা রকমারিতে থ্রিলার ক্যাটাগরীতে টপ ফাইভে আছে। অনলাইনে এর অনেক প্রচারণা হয়েছে। এই বইয়ে গতানুগতিক থ্রিলার বইয়ের বাইরে গিয়ে নতুন অনেক কিছু আমি সন্নিবেশিত করেছি।

বইমেলায় গাজীপুরের হারবাইদ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বই কিনতে এসেছেন দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের তিন বন্ধু। তাদের দুইজন আরিফুল ইসলাম ও নুর মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, বইয়ের প্রতি আমাদের অন্যরকম টান আছে। সব ধরনের বই পড়ি। নিজের মতো করে চিন্তা করতে পারি বই পড়ার মধ্যে। সায়েন্স ফিকশান, থ্রিলার বইয়ের প্রতি আমাদের আগ্রহ রয়েছে।

বুধবার (৯ মার্চ) অমর একুশে বইমেলার ২৩তম দিনে নতুন বই এসেছে ৫২টি। বিকাল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। নির্ধারিত প্রাবন্ধিক সরকার আবদুল মান্নানের অনুপস্থিতিতে তার প্রবন্ধটি পাঠ করে শোনানো হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কেরামত মওলা, গোলাম কুদ্দুছ এবং সৌম্য সালেক। সভাপতিত্ব করেন কবি কামাল চৌধুরী।

প্রাবন্ধিক বলেন, আমাদের ভাষা, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মহাসম্মিলনে রচিত জাতীয় হৃৎপিণ্ডের রক্তপ্রবাহে যিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি নিখাদ বাঙালি ছিলেন। বাঙালিত্বের যা কিছু শুভ, সুন্দর ও কল্যাণময় তার বিচিত্র শক্তি ও সৌন্দর্যে তিনি সমৃদ্ধ হয়েছিলেন। ফলে একজীবনে তিনি যে সংগ্রাম করেছেন, আত্মত্যাগের যে উজ্জ্বল মহিমা তিনি ছড়িয়ে গেছেন তা শুধু রাজনৈতিক ছিল না, ছিল শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিরও মুক্তি-সাধনা। তার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতিচর্চার প্রতিজ্ঞা থেকে বাংলাদেশ শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার তীর্থভূমিতে পরিণত হয়েছিল। নানামুখী প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত শিল্পী-সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতি কর্মীগণ তাদের সাহিত্যসাধনা এবং শিল্প ও সংস্কৃতিচর্চা অব্যাহত রেখেছেন।

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনা ছিল প্রসারিত। তিনি যে শিল্প-সাহিত্যের আদর্শে বিশ্বাস করতেন, তা বাংলার মহৎ সাহিত্যিকদেরই আদর্শ। বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির নানা রূপ বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনে নানামাত্রায় প্রতিফলিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২২
এসকেবি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।