ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সাংবাদিক পীর হাবিব স্মরণে নাগরিক শোকসভা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২২
সাংবাদিক পীর হাবিব স্মরণে নাগরিক শোকসভা নাগরিক শোকসভা।

সুনামগঞ্জ: সদ্য প্রয়াত বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান স্মরণে তার নিজ জেলা সুনামগঞ্জে নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
 
শুক্রবার (১১ মার্চ) বিকেল পৌনে ৪টায় সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে (বালুর মাঠ) সুনামগঞ্জ পৌরসভার আয়োজনে এই নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।  

শোকসভায় সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পাটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, সাবেক রাকসু ভিপি রাগিব আহসান মুন্না, সাবেক কৃতি ফুটবলার কায়সার হামিদসহ বিশিষ্টজনেরা।
 
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখতের সভাপতিত্বে শোকসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

শোকসভায় উপস্থিত পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, পীর হাবিব একজন লড়াকু সৈনিক ছিলেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলাকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তার সঙ্গে পরিচয় ২০১০ সালে। তিনি আমাকে সুনামগঞ্জের লোক হিসেবে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর তিনি আমাকে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।  

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, যখন পীর হাবিব লিখতেন, আমার সম্পর্কে লিখতেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তিনি লিখেছেন। তবে আমার সম্পর্কেও কম লিখেন নাই। অনেক কিছুই লিখেছেন। আমি যেভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, হাবিবও আমার বোন শেখ হাসিনার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত ছিল।  

তিনি বলেন, আমি আজ হাবিবের জন্য দোয়া করতে এসেছি। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আমি জীবনে যদি কোনো ভাল কাজ করে থাকি তাহলে সেই কাজের উছিলায় যেন হাবিবকে আল্লাহ জান্নাত দান করেন।  

জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, প্রয়াত পীর হাবিবের জন্মের সঙ্গে বাংলাদেশের মিল আছে, উনি স্বাধীন বাংলাদেশের কলম যোদ্ধা। অনেকেই বলেন, সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ থাকতে হয়, আমি এ কথা মানি না। পক্ষ থাকতে হবে, সেটা বাংলাদেশের পক্ষে। পীর হাবিব কারো সঙ্গে কখনো আপস করেননি। তিনি সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি দুই হাত খুলে লিখতেন। অনেকের হাতে কলম আছে কিন্তু সবাই লিখতে পারে না। কিন্তু পীর হাবিবের লেখনির মাধ্যমে আগুনের ফুলিঙ্গ বের হতো।  

তিনি বলেন, আমার সঙ্গে রাতে ফোনে অনেক কথা হতো। তিনি বলতেন, আর কতদিন দেশে জঙ্গিবাদ থাকবে অপশক্তির লোকরা আর কত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেবে? পীর হাবিব ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক সাংবাদিক। তিনি সব সময় চাইতেন বাংলাদেশে যেন সুস্থ রাজনীতি ফিরে আসে।  

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমার তেমন কোনো যোগাযোগ ছিল না। তার সঙ্গে আমার পরিচয় হয় ২০০৯ সালে। তিনি একটি টেলিভিশনে টকশো করতেন সেখান থেকে পরিচয়। তবে তার লেখার সঙ্গে অনেক আগেই পরিচয় ছিল আমার। তিনি একজন ভালো, সৌখিন ও নীতিবান মানুষ ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, পীর হাবিব সাধারণ মানুষের পক্ষে লিখেছেন, আমি চলে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। কিন্তু পীর হাবিব মারা যাওয়ায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। বাংলাদেশের মানত্রিচের আকাশে শকুন ঘুরছে তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। কিন্তু লেখকরা চলে যাচ্ছেন, কে লিখবে শেখ হাসিনার কথা। পীর ভাই যেমন লিখেছেন তেমনি আমরাও যেন সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে পারি। পীর হাবিব শুধু সুনামগঞ্জের না সারা পৃথিবীর।

পরিবারের পক্ষে থেকে পীর হাবিবুর রহমানের বড় ভাই অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান পীর, ছোট ভাই সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, রাইসা নাজ চন্দ্রস্মিতা কৃতজ্ঞতামূলক বক্তব্য দেন।

প্রয়াত পীর হাবিবুর রহমানের ছেলে আহনাফ ফাহমিন অন্তর বলেন, আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনারা যে আমার বাবাকে এভাবে ভালোবাসেন তা আমি কখনো বুঝতে পারিনি। আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই, আমার বাবা যদি কোনো ভুল করে থাকেন তা হলে মাফ করে দেবেন।

শোকসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যান জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন দলের স্থানীয় নেতারা।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।