লক্ষ্মীপুর: বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে গান-বাজনা করলে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যান।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহর সতর্কবার্তাটি ‘হাফেজ মনিরুল ইসলাম’ নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নির্দেশনা রূপে ফেসবুকে প্রচার করছেন।
তবে চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ দাবি করেছেন, তিনি গান-বাজনার বিষয়ে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছেন। কিন্তু তার নাম ব্যবহার করে ফেজবুকে পোস্ট দেওয়া ব্যক্তিকে তিনি চেনেন না। ওই লোক তার সতর্কবার্তাকে ভিন্নরূপে প্রচার করছেন। এছাড়া ওই ফেসবুক ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, রাতে উচ্চ শব্দে গান-বাজনা হলে মানুষ ঘুমাতে পারে না। এ জন্য রাতে গান-বাজনা না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। মানুষ অভিযোগ দিলে জরিমানা করা হবে।
খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে আমার ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার নিয়ম রয়েছে। আমার ফেসবুক আইডি নেই। কে বা কারা আমার নাম দিয়ে এটি ফেসবুকে ছেড়েছেন। এ ব্যাপারে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও বলেন, একজন আলেম হিসেবে মা-বোন ও স্কুল-কলেজ-মাদরাসাছাত্রীদের পর্দার জন্য বোরকা পড়ে বাইরে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। স্কুলে মোবাইল নিয়ে গেলে পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটবে। এতে স্কুলে যেন শিক্ষার্থীরা মোবাইল নিতে না পারে সেজন্য অভিভাবকদের সতর্ক করার জন্য ওয়াজ-মাহফিলে আমি কথা বলেছি। আমার কথাগুলো কোনো আইন নয়, সতর্কবার্তা ও পরামর্শ। রাষ্ট্রের আইনের বিরুদ্ধে আমি যেতে পারি না। আমি বলেছি এক রকম, লোকজন প্রচার করছে অন্য রকম।
খালেদ সাইফুল্লাহ বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত চলছে। চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, ফেক আইডি থেকে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন।
ফেসবুকে হাফেজ মনিরুল ইসলামের দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘আলহামদুলিল্লাহ, শুরু হল ইসলামী শাসন ব্যবস্থা। কাদিরা ইউনিয়নের বিয়ের অনুষ্ঠানে কোনো গানবাজনা চলবে না। যদি চলে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। বাজারে কোনো গানের আওয়াজ যেন না শুনি। তোমার মন চাইলে এয়ার ফোন দিয়ে শোন, আরেকজনকে শুনাইও না। যারা বক্স ভাড়া দাও, মনে রেখ এমন বাজেয়াপ্ত হবে কোনোদিন ফিরে পাবে না’।
কোনো অভিভাবক বোরকা ছাড়া মেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন না। যারা পাঠাবেন তাদের তালিকা করব। কী ব্যবস্থা নেই, সেটা পরে দেখবেন। স্কুলে কোনো ছাত্র-ছাত্রী মোবাইল নিতে পারবে না। মোবাইল বাড়িতে চালাবে। অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ এটা খেয়াল রাখবেন। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২২
এসআরএস