ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ঢাকা-ওয়াশিংটন সংলাপে প্রাধান্য পাবে র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
ঢাকা-ওয়াশিংটন সংলাপে প্রাধান্য পাবে র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা: ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে অংশীদারি সংলাপে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ। এছাড়াও  সংলাপে নিরাপত্তা, ইউক্রেন ইস্যু, সামরিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

সূত্র জানায়, আগামী ২০ মার্চ ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে সংলাপ শুরু হচ্ছে। সংলাপ সামনে রেখে বেশ কয়েকটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকের মধ্য দিয়ে সংলাপে বাংলাদেশের প্রাধান্যের বিষয়গুলো ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে।

ঢাকায় আয়োজিত এই সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড।

প্রাধান্য পাচ্ছে র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা:

র‍্যাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর তা প্রত্যাহারে বাংলাদেশ বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনাও তুলছে বাংলাদেশ। এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বোচ্চ ফোরামের এই বৈঠকে বাংলাদেশ এই ইস্যুটি বিশেষ প্রাধান্য দিতে চায়।

রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যু:

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ইস্যুটিও সংলাপে গুরুত্ব পেতে পারে। ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশ নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘে ভোট হলেও সেখানে কারো পক্ষ-বিপক্ষ নেয়নি বাংলাদেশ। তবে ইউক্রেনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র জোরালো অবস্থান নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র চাইছে, বিশ্বের সব দেশই ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিপক্ষে সরব হোক। তাই এবারের সংলাপে বিষয়টি উঠতে পারে।

দুই সামরিক সহযোগিতা চুক্তি:

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বর্তমানে দুটি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে জোরালো আলোচনা চলছে। এই দুটি চুক্তি হলো- জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া) ও অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট (আকসা)। তবে এখনই এই চুক্তি করতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশ। এই চুক্তির বিষয়ে আরো ধীরে পদক্ষেপ নিতে চায় ঢাকা।

মানবাধিকার ইস্যু:

বাংলাদেশে মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় সোচ্চার। বিশেষ করে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক সমাবেশের অধিকার ইত্যাদি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তাগিদ দিয়ে আসছে। এবারের সংলাপেও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিষয়টি উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারত্ব সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী। দুই দেশের মধ্যে অংশীদারি সংলাপ ছাড়াও আগামী কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি বৈঠক হবে। এছাড়া উচ্চ পর্যায়ের সফরও হবে। এসব বৈঠক এবং সফরে র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উত্থাপন  করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ওয়াশিংটনে প্রথম অংশীদারি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে প্রতিবছর একবার ঢাকা, পরের বার ওয়াশিংটনে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়। তবে করোনার কারণে গত দুই বছর এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুন মাসে ঢাকায় অংশীদারি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
টিআর/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।