ঢাকা, শুক্রবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইউপি সচিবকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন চেয়ারম্যান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২২
ইউপি সচিবকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন চেয়ারম্যান

খুলনা: রাতে অফিস করতে অস্বীকৃতি জানানোয় খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. ইকবাল হোসেনকে বেধড়ক মারপিট করেছেন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত সচিব ও হিসাবরক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতির পক্ষ থেকে খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২১ মার্চ) রাতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কয়রা থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ইউপি সচিব ইকবাল হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ প্রতিদিনই বিকেলে অফিসে আসেন। আর গভীর রাত পর্যন্ত অফিস করেন। এর ফলে সেবা প্রত্যাশীরা ভোগান্তির সম্মুখীন হন। সোমবারও বিকেলে পরিষদে আসেন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। কিন্তু বিকেল ৫টা বেজে যাওয়ায় আমি অফিস ত্যাগ করি। চেয়ারম্যান আমাকে অফিসে যেতে বললে আমি ৫টার পর অফিস করতে পারবো না বলে জানাই। পরে চেয়ারম্যানের লোকজন আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রেখে আমাকে চেয়ারম্যান ও আরও ৩ জন মিলে মারধর করেন।

তিনি আরও বলেন, তারা দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা আমাকে মারধর করেন। জীবনে আমি কখনও এতো মার খাইনি। তাদের পা ধরলেও আমাকে ছাড়েনি। এক সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেখানে আসেন। পরে একটি সাদা কাগজে আমার সই নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ’

ইউপি সচিব ইকবাল হোসেনের মা রোকেয়া বেগম বলেন, মোটর সাইকেলে দু’জন লোক এসে হুমকি-ধামকি দিয়ে আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। আমি ভয় পেয়ে তাদের পিছু পিছু ভ্যানে করে সেখানে যাই। চেয়ারম্যানের লোকজন আমার মোবাইলও কেড়ে নেয়। পরে অন্য একটি ঘরে নিয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখায়। তখন আমি বুঝতে পারি আমার ছেলের ক্ষতি করেছে তারা। এক সময় উপজেলা থেকে বড় অফিসাররা এলে তাদের হাতে পায়ে ধরে আমার ছেলেকে ছাড়ায়ে নিয়ে আসি।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের একটি বিষয় নিয়ে তার (সচিব) সঙ্গে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে নিজেদের মধ্যে মীমাংসা করে নিয়েছি।  

মঙ্গলবার বিকেলে সচিবকে মারধরের ঘটনায় কোন অভিযোগ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, কেউ অভিযোগ করেনি। বরং সচিব লিখিত দিয়েছেন চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল তা ঠিক হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২২
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।