ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাটি যাচ্ছে ভাটায়, ঝুঁকিতে পড়ছে সেতু

কাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২২
মাটি যাচ্ছে ভাটায়, ঝুঁকিতে পড়ছে সেতু

রাজবাড়ী: রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার গৌতমপুর সাতোটা উত্তরপাড়া গ্রামে গৌতমপুর ব্রিজের পাশ থেকে ভেকু দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক মাটি কেটে নেওয়ায় হুমকিতে পড়েছে সেতুটি। অবাধে মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়।

চোখের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে নীরব এলাকাবাসী।

গৌতমপুর ব্রিজ থেকে রায়নগর স্লুইস গেট বাজার পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকায় উড়ছে বালু এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। সড়ক ও সড়কের পাশের বাড়ী-ঘর, গাছপালা বালুর আস্তরনে ঢেকে গেছে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক চলাচল করায় ধুলায় চারিদিক অন্ধকারে ডুবে গেছে। এত সমস্য পরও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কেউ সোচ্চার হতে সাহস পাচ্ছে না।  

তবে স্থানীয়রা এই দূর্বিসহ জীবন থেকে মুক্তির প্রার্থনা করছেন। তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এভাবে মাটি খেকোদের নির্বিচারে মাটি খনন চলতে থাকলে গোমতি ব্রিজ হুমকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

দীর্ঘদিন ধরে মাটি তোলার কারণে ওই এলাকার গৌতমপুর সেতু ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। এছাড়া ট্রাক থেকে রাস্তায় মাটি পড়ে চলাচলের ক্ষেত্রেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

চরআফড়া গ্রামের গৌতমপুর বাজারে সেতুটির অবস্থান। এর দৈর্ঘ্য ১২০ মিটার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতু থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে ফসলি জমি থেকে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে তোলা হচ্ছে। সেখানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মাটি তোলার ফলে আশপাশের জমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জমি থেকে ট্রাকে করে মাটি নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। ট্রাকগুলো যখন রাস্তা দিয়ে যায়, তখন চারদিকে ধুলাবালু ছড়িয়ে পড়ে। আবার ট্রাক থেকে রাস্তায় মাটি পড়ে একটি আস্তরণ তৈরি হয়েছে। মাটিবোঝাই যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, তমিজ উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত। তারা সবাই স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। এ কারণে কেউ কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। তবে মাটি তোলার কারণে গৌতমপুর সেতু ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এলাকার মানুষের যাতায়াতের জন্য সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  

স্থানীয় লোকজনের আশঙ্কা, এভাবে সেতুর কাছাকাছি জায়গা থেকে মাটি তোলার ফলে সেতু ঝুঁকিতে পড়তে পারে। আবার আশপাশের অনেক জমিও হুমকিতে পড়ছে। প্রতিদিন দিনের বেলায় মাটি কাটা হচ্ছে। কেউ কিছু বলছেন না। এমনকি রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হাসান জানান, খনন যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটলে সেতুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য সেতুর কাছাকাছি থেকে খনন যন্ত্র দিয়ে মাটি উত্তোলন করা ঠিক নয়।

পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী জানান, হাবাসপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু বা মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। কৃষিজমি থেকে খনন যন্ত্র দিয়ে মাটি তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ। এটি বন্ধে প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়। দিনে অভিযান চালালে রাতে মাটি তোলা হয়। সেতু এলাকা থেকে মাটি উত্তোলনের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।