ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘রেস্তোরাঁগুলোতে চলছে নীরব চাঁদাবাজি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২২
‘রেস্তোরাঁগুলোতে চলছে নীরব চাঁদাবাজি’

ঢাকা: রেস্তোরাঁগুলোতে বিভিন্ন অধিদপ্তরের নীরব চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। চাঁদাবাজি ও হয়রানি চললে আগামীতে সব রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রেস্তোরাঁ মালিকরা।

তারা জানান, রমজান মাস এলেই রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর ব্যাপক খড়গ নেমে আসে। এবারোও এর ব্যতিক্রম হবে না বলে আশঙ্কা করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির মহাসচিব ইমরান হাসান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার নিরাপদ খাদ্য সারা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার সাথে একাত্মতা পোষণ করে কাজ করে যাচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অন্তরায় সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের অসহযোগিতা। ১২টি অধিদপ্তর আমাদের মনিটরিং করে যাচ্ছে। বছরের পর বছর আমরা বলে আসছি, আমরা একটি অধিদপ্তরের অধীনে কাজ করতে চাই। কিন্তু এর কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বরং উল্টো দিন যত যাচ্ছে প্রত্যেকটা অধিদপ্তর বিক্ষিপ্তভাবে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ/ক্ষোভ ঝাড়ছে রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর। পান থেকে চুন খসলেই বিশাল শাস্তি, কোনো বিশেষজ্ঞ ছাড়াই, কোনো অভিজ্ঞ লোক ছাড়াই যে যেভাবে পারছে জরিমানার নামে ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসা নষ্ট করছে। এভাবে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।  

তিনি আরও বলেন, আমরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করে যাচ্ছিলাম। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অনুরোধ করেছিলাম, আমাদের সেক্টরের ৯৫ শতাংশ কর্মী অদক্ষ ও স্বল্প শিক্ষিত। তাদের আগে ট্রেনিংয়ের আওতায় নিয়ে আসেন এবং আন্তঃমন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে আমাদের একটি মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তর/সংস্থার অধীনে নিয়ে আসেন, আমাদের একটি গ্রহণযোগ্য এসওপি দেন, যার গাইডলাইনে আমরা চলতে পারবো। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো সংস্থাই আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো এসওপি দেয়নি। উপরোন্তু ঢাকা মহানগরের দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তাদের টিম দিয়ে আমাদের পরিচালনার/মনিটরিং দায়িত্ব নিয়েছেন। যেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও আইসিডিডিআরবিকে যুক্ত করেছেন, কিন্তু প্রধান স্টেক হোল্ডার ও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটিকে যুক্ত করা হয়নি। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোনোদিনই সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এটা হয় আমরা বোঝাতে পারছি না, নয়তো সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বুঝেও না বোঝার ভান করছে। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ইমরান হাসান আরও বলেন, আমাদের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে হবে। মাহে রমজানের ইফতারি, সেহেরিসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য যেন নিরাপদ হয়, সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। অধিক মুনাফা লাভের জন্য কোনোভাবেই ব্যবসার নৈতিকতা হারানো যাবে না।

মহাসচিব আরও বলেন, করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত সেক্টরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেস্তোরাঁ সেক্টর। আমরা সরকার থেকে কোনো প্রণোদনা চাই না, আমরা সরকারের কাছে এসএমই খাত থেকে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ চাই, যাতে আমরা সাসটেইন করতে পারি। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান করবো, অবিলম্বে একটা টাস্কফোর্স/ কমিশন গঠন করে একটি সংস্থা/ অধিদপ্তরের অধীনে আমাদের এই খাতকে নিয়ে আসা হোক।

তিনি বলেন, রেস্তোরাঁ খাতের লাইসেন্স নিতে হয় পর্যটন কর্পোরেশন থেকে, সেটা ন্যাস্ত আছে ডিসি অফিসে। ডিসি অফিস থেকে ৮টি দলিলসহ ডকুমেন্টস চাওয়া হয় এই লাইসেন্সের জন্য, যা রেস্তোরাঁ মালিকদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সমস্ত কিছু মিলে এই যে অরাজকতা চলছে, বছরের পর বছর কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই। আমাদের মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারকে বাস্তবায়ন না করার জন্য, কোনো একটা পক্ষ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মাঠপর্যায়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে, যা দেখে মনে হচ্ছে এটা একটা দুরভিসন্ধিমূলক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সরকারকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ওসমান গনি, কোষাধ্যক্ষ তৌফিকুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ আন্দালিব উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২২
এসএমএকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।