ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুনর্বাসনের দাবিতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করসেপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২২
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুনর্বাসনের দাবিতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে উচ্ছেদ আতঙ্কে এবং উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ৫০টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের এবং প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

 

রোববার (৩ এপ্রিল) সকালে কসবা বাজারে এ ঘটনায় মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, কসবা দৈনিক বাজার উচ্ছেদ করতে হলে ক্ষুদ্রব্যবসায়ীদের আগে পুনর্বাসন করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দেলন গড়ে তোলা হবে। তারা বলেন, ‘আমরা এ এলাকারই সন্তান, রোহিঙ্গা নই। চা বিক্রি করে সারাদিন পরিশ্রম করে যা আয় হয় তা দিয়ে আমরা সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করাই। কিন্তু এ সময় যদি আমাদের উচ্ছেদ করা হয় তাহলে আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করতে পারবো না। এতে আমাদের স্বপ্ন ভেঙে যাবে।  

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, চা বিক্রেতা তানজিলা বেগম, আনারুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মাসুদ রানা, ব্যবসায়ী তৈমুর রহমান ও সাইফুদ্দিন প্রমুখ।  

জানা যায়, নাচোল উপজেলার ১ নম্বর কসবা ইউপির কসবা বাজারে প্রায় অর্ধশত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সরকারের খাসজমিতে দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। সেখানে একটি গ্রাম্য হাট-বাজার তৈরি হয়েছে। এলাকার আশপাশের গ্রামের লোকেরা সেখানে প্রতিদিন দৈনিক বাজার করে তাদের সংসারের চাহিদা পূরণ করে থাকেন। কসবা গ্রামের হাল ৩৯১ নম্বর দাগটির পরিমাণ প্রায় ১.৪১ শতক জমি যা হাটখোলা নামে আরএস রেকর্ডে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু কালের পরিবর্তনে সাপ্তাহিক হাটটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ায় সেখানে দৈনিক বাজার গড়ে ওঠে। এতে করে ওই এলাকার প্রায় ৫০টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মুদি দোকান, সার ও কীটনাশকের দোকান, দর্জির দোকান, হাঁস-মুরগি ও ওষুধের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান করে দোকানিদের যা আয় হয় তা দিয়ে তারা সংসার পরিচালনা করে থাকেন।

অপরদিকে, এ জায়গাটি আগে থেকেই হাট হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাটটি নতুন করে ইজারা দেন। আর ইজারাদারকে হাটটি বুঝিয়ে দিতেই হাটে গড়ে ওঠা দোকানপাটগুলো উচ্ছেদের পরিকল্পনা নেয়া হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ জানান, নোটিশ ছাড়া কাউকেই উচ্ছেদ করা হয়নি। কয়েকমাস আগে থেকেই অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে বলা হলেও তারা না সরে গিয়ে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে এবং আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। তাই প্রশাসন সীদ্ধান্ত নিয়েছে আদালতের মাধ্যমেই মামলাটির জবাব দেয়ার।  

এদিকে মানববন্ধনে অংশ নেয়া চা বিক্রেতা তানজিলা বেগম দাবি করেন, হাটের জায়গায় দোকানঘর উচ্ছেদ করার জন্য কোনো নোটিশ না দিয়ে স্থানীয় ইউপি’র গ্রাম্য পুলিশ রফিকুল ইসলাম দোকানিদের দোকান ঘর গত মঙ্গলবারের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার মৌখিক নির্দেশ দেন। গ্রাম পুলিশের এ হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে কসবা গ্রামের আনেসুর রহমানের ছেলে আকবর আলীসহ আরো অনেকে  তাদের দোকানের চালা, টিনসহ আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু তাদের কোনো জায়গা না থাকায় তারা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এর আগে, ভুক্তোভোগীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদানসহ নাচোল সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।