ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইসলামাবাদে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
ইসলামাবাদে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন

ঢাকা: ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশনে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপিত হয়েছে।

রোববার (১৭ এপ্রিল) হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এ উপলক্ষে হাইকমিশন প্রাঙ্গণ ব্যানার ও পোস্টারে সুসজ্জিত করা হয়।

ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, হাইকমিশনে পাকিস্তানে নিযুক্ত হাইকমিশনার রুহুল আলম সিদ্দিকী আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের পর হাইকমিশনার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। হাইকমিশনার তাঁর বক্তৃতায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, মোহাম্মদ মনসুর আলী এবং আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে। গভীর শ্রদ্ধা জানান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, শহিদ বুদ্ধিজীবী এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব স্তারের জনগণকে।

হাইকমিশনার মুজিবনগর সরকারের গুরুত্ব ও ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি গণপরিষদ গঠন করা হয়।

মুজিবনগর সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার প্রতি পূর্ণ সমর্থন এবং অনুমোদন দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করে। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন মেহেরপুর মহাকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদিত হয়। মুজিবনগর সরকার গঠনের ফলে বিশ্ববাসী স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামরত বাঙালিদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে। জনমত সৃষ্টি, শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনা ও যুদ্ধের রণকৌশল নির্ধারণে মুজিবনগর সরকার যে ভূমিকা পালন করেছে তা বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এক অন্যন্য গৌরবগাঁথায় স্বাক্ষর হয়ে রয়েছে।

হাইকমিশনার আরও বলেন, নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয় এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুর্নগঠনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকেও নৃশংসভাবে হত্যা করে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে সফলভাবে ৫ বছর দেশ পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে পুনরায় সরকার গঠনের পর বর্তমান সরকার মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দ্রারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে নিয়ে এসেছে। নারীর ক্ষমতায়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে।

সর্বশেষে জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।