নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের জমি রেজিস্ট্রি মাস খানেক ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ বিশনন্দী মৌজার একটি কোম্পানি জমি রেজিস্ট্রিতে দাবিকৃত চাঁদা চেয়ারম্যানকে না দেওয়ায় এ অলিখিত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি জমির দালালি ও জমি বিক্রেতারদের হয়রানি বন্ধে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সাব রেজিস্ট্রি অফিস, দলিল লিখক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশনন্দী ইউনিয়নের বিশনন্দী, শম্ভুপুরা, দড়ি বিশনন্দী, টেটিয়া ও চর বিশনন্দী মৌজার জমি প্রথমে স্থগিত করা হয়। এই মৌজারগুলো মধ্যেই বাংলাদেশ ফলিত, পুষ্টি ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ‘ঢাকা ইনভায়রনমেন্ট সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওয়াতায় দৈনিক ১০৫ কোটি অপরিশোধিত পানি উত্তোলনের জন্য আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী এলাকার মেঘনা নদীর তীরে ইনটেক পাম্পিং স্টেশনসহ বেশ কিছু বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার ফলে এ মৌজার জমিগুলো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির নজর পড়ে।
বিশনন্দী এলাকার বাসিন্দারা জানান, জমি বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি মেয়ে বিয়ে দেবেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে ঘুরছেন জমি বিক্রি করছে পারছেন না। এজন্য মেয়েকে বিয়েও দিতে পারছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সম্ভুপুরা মৌজা এলাকার একজন জানান, জমি বিক্রির টাকা দিয়ে মায়ের চিকিৎসা করাবেন। ১০ দিন ধরে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এলেও তার জমি রেজিস্ট্রি করতে পারেননি।
এদিকে দলিল লেখকরা এ ব্যপারে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও তাদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলিল লেখক জানান, এমনিতে নিয়মিত সাবরেজিস্টার নেই। তারপর বিশনন্দী ইউনিয়নে দলিল রেজিস্ট্রেশন বন্ধ। ফলে তেমন কাজ না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
এ ব্যপারে বিশনন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, দালালরা ভুয়া পর্চা বানিয়ে একজনের জমি অন্যের কাছে বিক্রিসহ এলাকার লোকদের সঙ্গে নানাভাবে প্রতারণা করছে। তাই স্থানীয়রা যেন হয়রানি কিংবা প্রতারণার শিকার না হয় সে ব্যপারে কিছু সাময়িক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজি বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, দলিল একেবারেই বন্ধ রয়েছে তা সঠিক নয়।
এ ব্যপারে আড়াইহাজার সাব রেজিস্ট্রার বজলুল রহমান বলেন, তার কাছে দলিল দাখিল করলে রেজিস্ট্রেশন করে দেবেন। এর বেশি কিছু তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশনন্দী ইউনিয়নে দলিল রেজিস্ট্রেশন বন্ধের বিষয়ে তিনি অবগত নন। খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
এমআরপি/এসআইএস