ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পটাশিয়াম সরবরাহ অব্যাহত রাখতে কানাডাকে অনুরোধ 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২২
পটাশিয়াম সরবরাহ অব্যাহত রাখতে কানাডাকে অনুরোধ  কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক ও লিলি নিকোলাস

ঢাকা: পটাশিয়াম সার সরবরাহ অব্যাহত রাখতে কানাডাকে অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, কানাডার রাষ্ট্রদূত কথা দিয়েছেন।

রাষ্ট্রদূত এটা ব্যক্তিগতভাবে দেখবেন যেন আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম কানাডা থেকে পেতে পারি। একইসঙ্গে খাদ্য সংকট দেখা দিলে কানাডা বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাদ্যশস্য সরবরাহ করবে বলেও জানান তিনি।  

বৃহস্পতিবার (০৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ অনুরোধ জানান।  

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দুদেশের বর্তমান সম্পর্ক এবং কৃষি ক্ষেত্রে দুদেশ কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারি তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে কানাডা আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার। তারা আমাদের এখানে খাদ্যশস্য সরবরাহ করে থাকে। যদি কোনো সংকট হয়, তবে সেই সংকটের ক্ষেত্রে কানাডা যেন আমাদের অগ্রাধিকার দিয়ে খাদ্যশস্য সরবরাহ করে সেই ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। ওনারা বলেছেন অবশ্যই বাংলাদেশ সেক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় খাদ্যশস্য পাবে।

তিনি বলেন, কানাডা থেকে আমরা অনেক কৃষিপণ্য আমদানি করে থাকি, যে সব পণ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারিনি। কিংবা ভালোভাবে আমরা উৎপাদন করতে পারি না। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, সয়াবিন এবং অন্যান্য তেল আমরা ক্যানোলা মাস্টার্ড এগুলো আমরা কানাডা থেকে আনি। গম এবং ডালও আমরা কানাডা থেকে আনি। করোনা এবং সম্প্রতি সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে একটা বিরাট সংকটের আশঙ্কা করছে সবাই। বিশ্ব ব্যাংক এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বলছে যে একটা ভয়াবহ খাদ্য সংকট হতে পারে। ইউরোপীয় দেশগুলোতে আমরা খাদ্য নিয়ে নানা জটিলতার কথা শুনছি।

কানাডা থেকে কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পটাশিয়াম সার আমদানি করা হয় জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, পটাশিয়াম মূলত তিনটি দেশ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরবরাহ হয়। বেলারুশ, রাশিয়া ও কানাডা। আমরা কানাডা থেকেও আনি, তাদের সঙ্গে সরকার টু সরকার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি বছরই তারা একটা ভালো অ্যামাউন্ট আমাদের সরবরাহ করে। তবে বেলারুশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে, তাদের কাছ থেকে আমরা পটাশিয়াম আনতে পারছি না।  

তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে আনতাম রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেটাও বন্ধ রয়েছে। এই মুহূর্তে সবাই কানাডার ওপরে নির্ভর করছে। এর ওপর চায়নাসহ বিভিন্ন দেশ প্যানিক বাইং (আতঙ্কিত হয়ে কেনা) শুরু করেছে। চীন তাদের ব্যবস্থায় তারা হয়তো নিতে পারবে কিন্তু এটা আমাদের জন্য বড় সমস্যা। তাই আজকে তাদের সঙ্গে আলোচনাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি অনুরোধ করেছি যতটা সম্ভব আমাদের প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম যেন কানাডা থেকে দেওয়া হয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আলু উৎপাদনে পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আগামী সিজনে অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে আমাদের পটাশিয়ামের দরকার হবে।  
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সম্প্রতি কানাডার সাচকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয় একটা বঙ্গবন্ধুর চেয়ার করেছে। সেখানে একটা ল্যাবরেটরি তারা স্থাপন করেছে। সেই কর্মসূচির আওতায় তারা বাংলাদেশকে ৬টি পিএইচডি স্কলারশিপ এবং ১৫টি পোস্ট ডক্টরাল প্রোগ্রামের সুযোগ দিচ্ছে। সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু চেয়ারের বিজ্ঞানী ও তাদের একটি টিম বাংলাদেশে আসবে। আগামী ৮ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের একটি সাক্ষাৎকার আছে। সেই সাক্ষাৎকারে আমরা কানাডা সরকারের সঙ্গে আরও কীভাবে সহযোগিতা পেতে পারি সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্রে কানাডার কারিগরি সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অ্যাগ্রো-প্রসেসিংয়ে তাদের বিনিয়োগ চাচ্ছি। তারা বলেছেন আগামী নভেম্বরে তাদের একটি এক্সিবিশন ফেয়ার ও সেমিনার হবে। তারা সেখানে আমাদের আমন্ত্রণ জানাবেন। আমরা একটা বাণিজ্য প্রতিনিধি দল কানাডায় পাঠাবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২২
জিসিজি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।