ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আমাকে বলুন, আমি আদায় করে দেব: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২২
আমাকে বলুন, আমি আদায় করে দেব: প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: সমস্যার কথা জানাতে শ্রমিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশিদের কাছে নালিশ না করে আমাকে বলুন। মালিকদের দিয়ে যদি কিছু আদায় করতে হয়, আমি আদায় করে দেব।

‘মহান মে দিবস ২০২২’ উপলক্ষে রোববার (৮ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে শ্রমিকদের জন্য এত কাজ করেছি তারপরও দেখি আমাদের দেশে কিছু কিছু শ্রমিক নেতারা আছেন তারা কোনো বিদেশি বা সাদা চামড়া দেখলেই তাদের কাছে নালিশ করতে খুব পছন্দ করে।

‘আমি জানি না এ মানসিক দৈন্যতা কেন? বা এর সঙ্গে কী অন্য কোনো স্বার্থ জড়িত আছে? কোনো দেনা-পাওনার ব্যবস্থা আছে? সেটা আমি জানি না। ’

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দেশে কোনো সমস্যা হলে অন্তত আওয়ামী লীগ সরকার যতক্ষণ ক্ষমতায় আছে, আমি যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি অন্তত এ নিশ্চয়তা দিতে পারি যেকোনো সমস্যা আমরা সমাধান করতে পারি নিজেরা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশের মালিক ও শ্রমিক তারা বসে আলোচনা করে সমস্যাগুলো সমাধান করবে। আমরা নিজের দেশের বিরুদ্ধে বা নিজের দেশের সম্পর্কে অন্যের কাছে কেন কাঁদতে যাব, বলতে যাব। আমরা তো এটা চাই না। বাংলাদেশ আত্মমর্যাদা নিয়ে চলবে।

টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সমস্যা আমরা দেশেই সমাধান করতে পারবো। আমি সেই সমস্ত শ্রমিক নেতাদের বলবো আপনি বিদেশিদের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি না করে আপনার যদি সমস্যা থাকে আমার কাছে আসবেন। আমি শুনব। মালিকদের দিয়ে যদি কিছু আদায় করতে হয়, আমি আদায় করে দেব। আমি পারব।

শ্রমজীবী মানুষের সুরক্ষা ও কল্যাণের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছু করে যাচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটুকু বলব আমরা আমাদের দেশের মানুষের কথা ভাবি, মানুষের কথা চিন্তা করি। মানুষের কল্যাণে কাজ করি। ...আমাদের রাজনীতি তো হচ্ছে দেশের শ্রমিক শ্রেণি, কৃষক, দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষ, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি আমাদের দেশকে উন্নত করতে হলে এ শ্রমিক শ্রেণির অবদান সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শ্রমিক-মালিক উভয়ই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলবেন। সেটাই আমি চাই। ...শ্রমিক-মালিক একতা উন্নয়নের নিশ্চয়তা। কাজেই শ্রমিক-মালিকের মধ্যে যদি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক না থাকে তাহলে কখনও উন্নয়ন হয় না।

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে অনেক মালিকের টাকা না দেওয়াকে দুঃখজনক মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, মালিকদের যেটা এখানে নির্দিষ্ট রয়েছে একটা পার্সেন্টিজ তারা এখানে জমা দেবেন এটা অনেকে দেন না। এটা খুব দুঃখজনক। আমি মনে করি এটা যথাযথভাবে দেওয়া উচিত। একজন যখন বিপদে পড়ে তখন তার পাশে দাঁড়াতে হবে।

শিশু শ্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের শিশুরা শ্রম না দিয়ে তারা আগে শিক্ষা গ্রহণ করবে। এটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, শিশু শ্রম যাতে বন্ধ হয় তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। তাদের আমরা স্কুলে পড়ানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি, ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ ব্যাপারে আমাদের যে নীতিমালা ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কোনো শিশু শ্রম থাকবে না।

পারিবারিক কাজের ঐতিহ্য রক্ষা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটু ব্যতিক্রম আছে। কিছু কিছু ট্রেডিশনাল কাজ থাকে সেগুলো যদি ছোটবেলা থেকে রপ্ত না করে তবে তাদের পৈত্রিক যে কাজগুলো বা ব্যবসাগুলো সেগুলো চালু থাকবে না। কারণ এটা হাতে-কলমে কিছু শিক্ষা। কিন্তু সেটা কোনো ঝুঁকিপূর্ণ না। ঝুঁকিপূর্ণ কাজে কোনো শিশুকে ব্যবহার করা যাবে না। সেটা আমরা বন্ধ করেছি। কিন্তু তাদের যে ট্রেডিশনাল ট্রেনিং সেটা বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে তারা করতে পারে।

সারা পৃথিবীতে ১০ গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিজের মধ্যে সাতটি বাংলাদেশে জানান শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২২
এমইউএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।