ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রশাসনের ত্রাণ সহায়তা ফেরত দিল পাড়াবাসী

কৌশিক দাশ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৪ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২২
প্রশাসনের ত্রাণ সহায়তা ফেরত দিল পাড়াবাসী

বান্দরবান: প্রশাসনের দেওয়া ত্রাণ সহায়তা ফেরত দিয়েছে বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের রেং ইয়ান পাড়ার বাসিন্দারা। ‘লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি’র এক কর্মীকে সেখানে দেখার পর তারা ওই ত্রাণ ফিরিয়ে দেন।

তারা মনে করছেন, ওই রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের টাকায় এসব ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।   

জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ‘লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি’র লোকজন ৩০০ একর জুম ক্ষেত পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওই পাড়ার বাসিন্দাদের।  

সরই ইউনিয়ন থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রেং ইয়ান পাড়ায় খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট, এমন সংবাদে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেন। প্রথমে তারা সহায়তা গ্রহণ করে নিজ নিজ বাসায় নিয়ে গেলেও পরে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পক্ষ থেকে এই ত্রাণ দেওয়া হয়েছে সন্দেহ করে তা ফেরত দিয়ে দেন।

৮ মে (রোববার) সকাল ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সকালে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পাড়ায় ত্রাণ নিয়ে গেলে পাড়ার বাসিন্দারা প্রথমে ত্রাণ গ্রহণ করেন, পরে সেখানে রাবার কোম্পানির কর্মীদের উপস্থিতির অভিযোগে সেই ত্রাণ আমাদের ফিরিয়ে দেয়। আমরা ৩৬ পরিবারের জন্য চাল, মসুর ডাল, মুড়ি, চিড়া, লবণ এবং পানি নিয়ে গিয়েছিলাম।  

এদিকে ত্রাণ বিতরণের সময় ঘটনাস্থলে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এক কর্মীকে পাড়াবাসী দেখতে পেয়ে তাকে ধাওয়া করে। পরে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের দুই সদস্য, সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাড়াবাসীদের বুঝিয়ে শান্ত করেন।

রেং ইয়ান পাড়ার কারবারি রেংয়ান ম্রো বাংলানিউজকে বলেন, পাড়াবাসীর ত্রাণের খুব দরকার। কিন্তু আমরা ত্রাণ নিতে গিয়ে দেখি যারা আমাদের জুমের বাগান পুড়িয়ে দিয়েছেন, সেই লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কর্মীরা প্রশাসনের সদস্যদের সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন, আর আমরা তাদের টাকায় কোনো ত্রাণ নেব না।  

তিনি আরো বলেন, কয়েকটি ত্রিপুরা পরিবার প্রথমে ত্রাণ নিলেও সেই ত্রাণ পরে তারা ফেরত দেয়।

সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিছ বাংলানিউজকে জানান, আমরা ত্রাণ দেওয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পাড়ায় ছুটে গিয়েছিলাম। প্রথমে তারা লাইন ধরে সবাই ত্রাণ নিয়ে বাড়ি গিয়েছিল, পরে হঠাৎ করে সবাই ত্রাণ নেবে না বলেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শেষে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রায় ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তাদের ত্রাণ হাতে তুলে দিতে না পেরে ফিরে আসেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২২
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।