ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৮ মে ২০২৪, ১৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদের আগে-পরে ১৪ দিনে ২৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭৬

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২২
ঈদের আগে-পরে ১৪ দিনে ২৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭৬

ঢাকা: ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৪ দিনে (২৫ এপ্রিল-৮ মে) দেশে ২৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৬ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে কমপক্ষে এক হাজার ৫০০ জন।

নিহতের মধ্যে নারী ৩৮ জন, শিশু ৫১ জন।

এই ১৪ দিনে ১২৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫৬ জন। দুর্ঘটনায় ৫৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৯ জন। এই সময়ে ৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ১৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

দুর্ঘটনার মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৮৩টি দুর্ঘটনায় ১০৬ জন নিহত। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৭টি দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং নাটোর জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৮ জন নিহত হয়েছেন। শরীয়তপুর, খাগড়াছড়ি, নড়াইল, ঝালকাঠি, ঠাকুরগাঁও এবং নেত্রকোনা; এই ৬টি জেলায় সামান্য সংখ্যক দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের ঈদুল ফিতরে রাজধানী ঢাকা থেকে কমবেশি ৯০ লাখ মানুষ ঘরমুখী যাত্রা করেছে এবং দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৩ কোটি মানুষ যাতায়াত করেছে। ঈদের আগে-পরে যথেষ্ট ছুটি থাকায় এবং সরকারের কিছুটা তৎপরতার কারণে ঈদযাত্রা তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক ছিল। তবে গণপরিবহনের টিকেট কালোবাজারী, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও পথে-ঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের করের টাকায়, বৈদেশিক ঋণে আমাদের সড়ক নির্মাণ করা হয়। এই সড়কে চাঁদাবাজি করা হয় কিসের অধিকারে, কোন নৈতিকতায়? প্রশ্নটির উত্তর জরুরি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঈদযাত্রায় সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় বিষয় ছিল ব্যাপক মোটরসাইকেলের ব্যবহার, যা পূর্বে কখনো দেখা যায়নি। গণপরিবহন সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী না হওয়া এবং যানজট এড়াতে রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ গণপরিবহনের বিকল্প হিসেবে মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা করেছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। কারণ মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই মোটরসাইকেল দূরের যাত্রায় কোনোভাবেই গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না।

এছাড়া ঈদযাত্রা ও ঈদ উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাপক সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন। কিন্তু যেসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেনি, শুধু আহত হয়েছে- সেসব দুর্ঘটনার অধিকাংশই গণমাধ্যমে আসেনি। ফলে দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র জানা যাচ্ছে না। তবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে যে পরিমাণ মানুষ ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসা নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন তা থেকে অনুমান করা যায় সারা দেশে আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার হবে বলেও জানায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

এর আগে গত বছরের ঈদুল ফিতরের চেয়ে এ বছরের ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৮ দশমিক ৪১ ভাগ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭৪ ভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২২
এইচএমএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad