সিরাজগঞ্জ: অতিবর্ষণের ফলে যমুনা নদীতে পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জে অরক্ষিত নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। ভাঙন দেখা দিয়েছে শাহজাদপুরে যমুনার বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প এলাকাতেও।
ইতোমধ্যে ওই এলাকার বেশকটি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে পাঁচ গ্রামের হাজারও পরিবার। গত দুদিনে ৪০/৪৫টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে দাবি এলাকাবাসীর।
শনিবার (২১ মে) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যমুনায় পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের আরকান্দি, ঘাটাবাড়ি, জালালপুর, পাচিল ও পাকুরতলা গ্রামে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। অন্তত ৪০টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী তীরবর্তী অঞ্চলের শত শত পরিবার ভাঙন আতঙ্কে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে।
পাউবো সূত্র জানায়, শাহজাদপুর উপজেলার এনায়েতপুর থানাধীন ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার যমুনার ডান তীর ভাঙনরোধে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সাড়ে ৬শ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে কাজও শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে স্লোব তৈরি করে জিও ব্যাগগুলো পিচিং করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ যমুনার পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় স্লোব ভেঙে পড়তে থাকে। সেই সঙ্গে জিও ব্যাগগুলোও নদীগর্ভে চলে যায়। ধীরে ধীরে স্লোবের অদূরে বাড়িঘরে ও ফসলি জমিগুলোতে ভাঙন শুরু হয়ে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।
জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বলেন, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এ এলাকায় ভাঙন চলে আসছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখানে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প পাস হয়। কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু কাজের তেমন গতি ছিল না। এখন প্রকল্প এলাকাতে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। কয়েকদিনে অর্ধশত বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। শত শত মানুষ ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেল নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ভাঙনের বিষয়টি পাউবোকে জানানো হয়েছে। আর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভাঙন কবলিতদের তালিকা প্রস্তুত করে সহায়তা দেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকা ভাঙন রোধে সেখানে সাড়ে ৬শ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রতিটি প্যাকেজেই স্লোবের ওপর জিওব্যাগ ফেলা হয়েছিল। দুই তিনটা জায়গাতে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনরোধে আজ থেকে আরও জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগামী বছর থেকে প্রকল্প এলাকায় সিসি ব্লক ডাম্পিং করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২২
আরএ