ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পণ্যের মান নিশ্চিতে বিএসটিআইকে আপসহীন হতে হবে: শিল্পমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
পণ্যের মান নিশ্চিতে বিএসটিআইকে আপসহীন হতে হবে: শিল্পমন্ত্রী

ঢাকা: পণ্যের মান, ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনকে (বিএসটিআই) আপসহীন হতে নির্দেশ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। একইসঙ্গে বিএসটিআই’র সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।

রোববার (২২ মে) রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র উদ্যোগে ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।

বিএসটিআই’র মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. মো. নজরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে সভায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা ও এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।  

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিচালক (মেট্রোলজি) প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদুল বারী।  

এছাড়া অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএসটিআই’র কাউন্সিলের সদস্য, মান প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ, শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, স্টেকহোল্ডার ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই সক্ষমতার দিক থেকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বিএসটিআই পণ্যের মান প্রণয়ন, পরীক্ষণ, মান সনদ দেওয়া, সঠিক ওজন ও পরিমাপের নিশ্চয়তা বিধান, ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস সনদ দেওয়ার পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর ইতোমধ্যে হালাল সার্টিফিকেট দেওয়া শুরু করেছে। এ কার্যক্রম রপ্তানি বাণিজ্যে বিশাল ভূমিকা রাখবে। পণ্য পরীক্ষণ এবং ওজন ও পরিমাপের ক্ষেত্রে বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে বিএসটিআইতে আরও অত্যাধুনিক ৮৯টি ল্যাবরেটরি স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিএসটিআই’র সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কের কথা স্মরণ করে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৪ সালে বিএসটিআই আন্তর্জাতিক মান সংস্থা- আইএসও’র সদস্যভুক্ত হয়। বিএসটিআই’র টেস্ট রিপোর্ট যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য হয় সে লক্ষ্যে সরকার ও বিএসটিআই কাজ করে যাচ্ছে। পণ্য উৎপাদনে পরিমাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হয় সেজন্য লেনদেনের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত মান ও সঠিক পরিমাপের পণ্য নিশ্চিত করতে হবে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, পণ্যের মান প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিম্নমানের পণ্য উৎপাদন-সরবরাহ এবং ওজনে কারচুপি রোধকল্পে বিএসটিআই নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ও সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে লাইসেন্সবিহীন, নকল পণ্য উৎপাদনকারি ও পরিমাপে কারচূপিকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা সর্তক হচ্ছে এবং জনগণ সঠিক ওজন ও পরিমাপে পণ্য পাচ্ছেন। এছাড়া বিএসটিআই’র ল্যাবরেটরিতে রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প, ঔষধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত ওজন ও পরিমাপক যন্ত্র ক্যালিব্রেশন সেবা দেওয়া হচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প সচিব বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে বিএসটিআই’র কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় আনার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিএসটিআই’র মানচিহ্ন ও লাইসেন্সের অনৈতিক ব্যবহার রোধকল্পে ওয়েব বেজড কিউআর কোড সম্বলিত সফটওয়্যার প্রবর্তন করতে যাচ্ছে। ফলে ভোক্তাসাধারণ মোবাইল ফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে পণ্যের অনুকূলে প্রদত্ত বিএসটিআই লাইসেন্স, সার্টিফিকেট ও আমদানি ছাড়পত্রের সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন।

এছাড়া এ সফটওয়্যার ব্যবহার করে গ্রাহকরা ওজন ও পরিমাপ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম যথা: মোড়কজাত পণ্যের নিবন্ধন, ক্যালিব্রেশন সনদ ও ভেরিফিকেশন সনদের তথ্য সহজে যাচাই করতে পারবেন এবং পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে ওজন ও পরিমাপে কারচুপি না করা এবং ভোক্তা সাধারণের স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

প্রতিটি স্থল বন্দরে বিএসটিআই’র অফিস স্থাপনের প্রস্তাব করে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব স্থল বন্দর রয়েছে তার প্রতিটি স্থল বন্দরে বিএসটিআই’র ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হলে আমদানি-রপ্তানি অনেক গতিশীল হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পণ্য ভারতে রপ্তানির জন্য বিএসটিআই’র সার্টিফিকেট ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যেন গ্রহণ করে সেজন্য উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব করেন। ফলে বাংলাদেশের খাদ্য পণ্য রপ্তানি অনেক বাড়বে। এছাড়া তিনি দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় স্থানীয় চেম্বার প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিকে সম্পৃক্ত করারও প্রস্তাব করেন। গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর কর্মকাণ্ডের দায়ভার ব্যবসায়ী সংগঠন নেবে না। তিনি বিএসটিআইকে এ বিষয়ে কঠোর হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।