ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহেই গলা কেটে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহেই গলা কেটে হত্যা

ঢাকা: কেরানীগঞ্জ থানার বরিশুর এলাকায় রেশমা আক্তারের সঙ্গে কাতার প্রবাসীর পরকীয়া রয়েছে এমন সন্দেহে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেন তার স্বামী নুরুল ইসলাম। পরে গ্রেফতার এড়াতে বরিশাল ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন ছিলেন তিনি।

রোববার (২২ মে) রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে নুরুলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

সোমবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মাহফুজুর রহমান।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন ১৭ মে সকালে রেশমা ও নূরুল ইসলাম দুজনে মিলে তাদের ছেলে মো. ইয়াসিনকে (১০) মাদরাসায় ভর্তি করাতে যায়। মাদরাসা থেকে ফেরার পথে ইয়াসিনকে একা তার নানার বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে দুজনে পাসপোর্ট ফটোকপি করতে যায়। এরপরই বেলা পৌনে একটার দিকে নুরুল তার শ্বশুরের বাসায় এসে জানায় রেশমাকে তার ভাড়া করা মেসে আটকে রেখে এসেছে। পরে রেশমার স্বজনরা মেসের দরজা ভেঙ্গে গলা কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় মরদেহ ফ্লোরে পড়া অবস্থায় দেখতে পায়। পরবর্তীতে নিহত রেশমার বোন বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মো. নুরুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ২ থেকে ৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব-১০ অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, ১২ বছর আগে নিহত রেশমা আক্তারের সঙ্গে নুরুল ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১০ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী অনুমতিতে রেশমা  জর্ডান চলে যায়। জর্ডানে থাকাবস্থায় রেশমার সঙ্গে নুরুল ইসলামের সাংসারিক জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিবাদ তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের সাংসারিক বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে রেশমার স্বামী নুরুল ইসলামকে ডিভোর্স দেন। গত ২৮ এপ্রিল রেশমা দেশে ফিরে আসলে স্বামী নুরুল তালাক হওয় সত্ত্বেও তাকে নিয়ে সংসার করার জন্য রেশমা ও তার মা-বোনসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বিভিন্নভাবে আকুতি-মিনতি করতে থাকে। একপর্যায়ে রেশমাসহ সবাই নুরুলের কথায় রাজি হয়ে গত ১৫ মে আবারও সংসার শুরু করেন তারা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল র‌্যাবকে জানিয়েছে, নুরুল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সত্যতা স্বীকার করেছে। সে পেশায় বাবুর্চি। পাশাপাশি বোরকা তৈরির একটি কারখানা ছিল তার। কিন্তু মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকায় সেই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। জর্ডান ফেরত রেশমার সঙ্গে আবারও সংসার শুরু করার দুদিনের মাথায় রেশমা সঙ্গে আক্তারের সঙ্গে কাতার প্রবাসী এক যুবকের সম্পর্কের সন্দেহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিবাদের সৃষ্টি হয়। এতে নুরুল ক্ষুব্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে রেশমাকে ভাড়া বাসায় নিয়ে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পরপরই নুরুল আত্মগোপনের জন্য প্রথমে বরিশাল, চাঁদপুর হয়ে চট্টগ্রাম যান। চট্টগ্রামে দুইদিন অবস্থান করার পর সেখানেও নিজেকে নিরাপদ মনে না করে পুনরায় ঢাকা হয়ে বরিশাল যাওয়ার সময় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৯ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২২
এমএমআই/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।