ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল পেলেন দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল পেলেন দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী

ঢাকা: মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল পেয়েছেন দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। তাদের এ অর্জনে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ শুধু শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যেতে আমাদের সংকল্পকে শক্তিশালী করে।

আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাবাব ফাতিমা এ কথা বলেন। এদিন জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী দুই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী- মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান ও ল্যান্স-কর্পোরাল রবিউল মোল্লাকে দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল দেওয়া হয়।

শুক্রবার (২৭ মে) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানায়।

মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক’এ নিয়োজিত মিনুসকা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন। দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত আনমিস মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন ল্যান্স কর্পোরাল রবিউল মোল্লা।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজের কাছ থেকে বাংলাদেশের পক্ষে মেডেল গ্রহণ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন মেডেলগুলো নিহত শান্তিরক্ষীদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেবে।

এবারের আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী ৪২টি দেশের ১১৭ জন শান্তিরক্ষীকে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল দেওয়া হয়। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেজ বাংলাদেশসহ ৪২টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে স্ব স্ব দেশের মেডেল তুলে দেন।

দিবসটি উপলক্ষে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে রক্ষিত শোকবইয়ে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। শোকবার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্ব শান্তির জন্য পবিত্র দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশ তার অনেক সাহসী সন্তানকে হারিয়েছে। শান্তিরক্ষায় জীবন দানকারী সকল বীর শান্তিরক্ষীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান তিনি। অপূরণীয় এ ক্ষতির জন্য নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান রাবাব ফাতিমা।

মেডেল প্রদান অনুষ্ঠানের পর কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী সকল শান্তিরক্ষীদের সম্মানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের উত্তর লনে অবস্থিত শান্তিরক্ষী মেমোরিয়াল সাইটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রদূত। এ সময় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা ও জাতিসংঘ সদরদপ্তরে কর্মরত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বছর আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘জনগণ শান্তি অগ্রগতি: অংশীদারিত্বের শক্তি’। দিবসটিতে প্রতিবছর শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও সাহসিকতার স্বীকৃতি এবং যারা শান্তির জন্য জীবন হারিয়েছেন তাদের মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেলের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়।

বাংলাদেশ বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশের ৬ হাজার ৮০২ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের ৯টি মিশনে কর্তব্যরত রয়েছেন। দায়িত্বরত অবস্থায় এ পর্যন্ত জীবন উৎসর্গ করেছেন ১৬১ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
টিআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।