ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে খুবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে খুবি গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে খুবি

খুলনা: মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হানাদার বাহিনীর টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত টিনশেড ঘরটিকে ‘গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ হিসেবে সংরক্ষণ ও এর পারিপার্শ্বিক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রোববার (২৯ মে) দুপুরে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে খুলনার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের মুজিব বাহিনীর প্রধান ও বাগেরহাট জেলা পরিষদ প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুনুর রশীদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা জেলা ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার মাহবুবার রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা মহানগর ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলমগীর কবীর।

এ সময় উপাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্বাধীনতার স্বপক্ষের নিরীহ শত শত মানুষকে হত্যা করে মরদেহ গল্লামারী ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ফেলতো। এখানে তৎকালীন খুলনা রেডিও সেন্টার কার্যকর ছিল এবং সেটি হানাদার বাহিনীর শক্তিশালী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হতো। রেডিও সেন্টারটির পাশেই অবস্থিত একটি টিনশেড ঘরে পাক সেনারা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষদের ধরে এনে নৃশংসভাবে নির্যাতনের পর হত্যা করতো। স্মৃতিবাহী সেই টর্চার সেল টিনশেড ঘরটি এখনও ক্যাম্পাসে বিদ্যমান রয়েছে। তবে তা সংস্কারের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখনই এটা সংস্কার না করা হলে ভবিষ্যতে স্মৃতিচিহ্নটুকু থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিদর্শন হিসেবে রাখার উদ্দেশ্যে এই টর্চার সেলটিকে ‘গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন, ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহেরসহ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্যরা স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। তারা এ বিষয়ের স্বপক্ষে মত দিয়েছেন। এই টিনশেড ঘরটি সংস্কার ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়নে ইউজিসি থেকে প্রাথমিকভাবে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ১৩ এপ্রিল ও বিজয় লাভের প্রাক্কালে ১৫-১৬ ডিসেম্বরে এই স্থানে যুদ্ধের স্মৃতি স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা এখানে শহিদ হাবিব ও আনছারসহ অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করেন।

সভা শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে উপাচার্য একাত্তরের টর্চার সেল হিসেবে খ্যাত টিনশেড ঘরটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং এর সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বিষয়টি তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, সংস্কার ও উন্নয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থপতি প্রফেসর ড. খো. মাহফুজ উদ দারাইন, সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি এস এম নাজিম উদ্দিন, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. আব্দুর রাজ্জাক জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আতিয়ার রহমান, এস্টেট শাখার উপ-রেজিস্ট্রার কৃষ্ণপদ দাশ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
এমআরএম/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।