ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিস্ফোরণে এসিড বৃষ্টির গুজব, যা বললেন রসায়নবিদরা

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২২
বিস্ফোরণে এসিড বৃষ্টির গুজব, যা বললেন রসায়নবিদরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বিস্ফোরণে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।  

রাসায়নিক পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সময় লাগে প্রায় ৬১ ঘণ্টা।

এরমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। ডিএমপি পরিচালকের বরাত দিয়ে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও এ ধরনের কোন পোস্ট ডিএমপি থেকে দেওয়া হয়নি। তবে, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বিস্ফোরণে এসিড বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কিনা সেটি নিয়ে কথা বলছেন রসায়নবিদরা।

বিভিন্ন আইডি থেকে শেয়ার হওয়া পোস্টটাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘১০/১৫ দিনের মধ্যে কোন বৃষ্টি হলে কেউ এটাতে ভিজবেন না, চট্টগ্রাম শহর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশে-পাশের এলাকার মানুষজন আগামী কয়েকদিন অন্তত বৃষ্টিতে ভিজবেন না। ঘর থেকে বের হলে সর্বক্ষণ সঙ্গে ছাতা রাখুন। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড একটি অম্লধর্মী অক্সাইড বিধায় দূষিত বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে এসিড বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তাই যতদূর সম্ভব বৃষ্টি এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে বৃদ্ধদের বৃষ্টির সময় ঘর থেকে বেরোতে দেবেন না। যতটুকু খারাপ ঘটে গেছে এরচেয়ে বেশি কিছু যাতে না ঘটে, সবাই সচেতন থাকুন নিজের অবস্থান থেকে। সবাইকে সর্তক বার্তাটি প্রধান করুন, নিজে বাঁচুন, অন্যকে ও সাহায্য করুন৷ ডিএমপি পরিচালক নিউজটি ছড়িয়ে দিন। ’ 

বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর কমেন্ট করলে ভালো হয়। কারণ তদন্তে পুরো বিষয়টি উল্লেখ থাকে। কী কী বিষয় সেখানে পুড়েছে। তবে শুধুমাত্র হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বিস্ফোরণে এসিড বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এটার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।

বিশেষজ্ঞরা জানান, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড হলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল। এটা সাবধানে রাখতে হয়। এটা রাখার জন্য আলাদা কন্টেইনারের প্রয়োজন পড়ে। বিশেষ ব্যবস্থায় এটিকে রাখতে হয়। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড যেখানে রাখা আছে তার আশেপাশে কী আছে, কীভাবে রাখা আছে এসব কিছুর ওপরে এর আচরণ নির্ভর করে। তবে উচ্চ তাপের কারণে বিস্ফোরণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অন্যদিকে এসিড বৃষ্টি সালফিউরিক এসিড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের কারণে হয়ে থাকে।

ঢাবির রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এসিড বৃষ্টির কোন যুক্তি দেখি না। কি থেকে এসিড বৃষ্টি হয় সেটি আমাদের জানতে হবে। নাইট্রোজেন কিংবা সালফিউরিক এসিড হলে ভিন্ন কথা। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড এটি দাহ্য পদার্থ না হলেও এটা অক্সিডাইজিং এজেন্ট। যা অক্সিডাইজার হিসেবে কাজ করে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বিস্ফোরণে পুরো ডাটা আমাদের কাছে নেই। সেখানে কি কি জিনিস পুড়েছে সেটি সম্পূর্ণরুপে জানা গেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। তবে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছাড়া অন্য কোন রাসায়নিকের উপস্থিতি না থাকলে এসিড বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। কারণ হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ভেঙে গিয়ে পানি আর অক্সিজেন হয়। এখন এখানে কী বার্ন করেছে সেটি জানতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২২
এসকেবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।