ঢাকা, সোমবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষা, চলছে বাস রুটের প্রচার

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষা, চলছে বাস রুটের প্রচার

বরিশাল: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হচ্ছে আগামী ২৫ জুন। এর মধ্য দিয়ে উত্তাল পদ্মায় ফেরি যুগের অবসান ঘটিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালসহ ২১ জেলার সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত হচ্ছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থার এ উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের পরিবহন সেক্টরেও আসছে বিপুল পরিবর্তন। এরইমধ্যে ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে নতুন নতুন যাত্রীবাহি বাস সংযোজন হচ্ছে।

বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগ মুহুর্তে টার্মিনালে অনেকটাই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বরিশাল থেকে ঢাকাসহ উত্তর ও দক্ষিন পূর্বাঞ্চলে যাত্রীসেবা দিতে বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি এ টার্মিনালে কাউন্টার সাজানোসহ ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে ভড়ে ফেলেছে। আবার ‘ইলিশ’সহ কিছু কিছু কোম্পানি তাদের বাস সংযোজন করে টার্মিনালে বসিয়ে রেখেছে। যেটি প্রচারের কাজও করছে।

বাস শ্রমিক সেলিম মিয়া বলেন, মূলত বরিশাল-ঢাকা রুটে যাত্রীবাহি সব বাস আরিচা হয়ে চলাচল করে। মাওয়া দিয়ে অর্থাৎ যেখানে পদ্মাসেতু হচ্ছে সেই জায়গা দিয়ে সুগন্ধা, সার্বিক ও সাকুরা পরিবহনের হাতে গোনা কয়েকটি বাস চলাচল করে। ফেরির ভোগান্তি না থাকলে এ রুটটি দিয়ে বাস চলাচল করলে আরিচার থেকে ১ শত কিলোমিটার কম পথ ব্যবহার করে ঢাকায় পৌঁছানো যাবে। আর সড়কে কোন ত্রটি না থাকলে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এ রুটে ঢাকা যেতে সাড়ে ৩ ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে না। তাই বিলাসবহুল গাড়িগুলো দক্ষিণাঞ্চলে তাদের প্রচার চালাতে এরইমধ্যে টার্মিনালগুলোতে কাউন্টার নেওয়াসহ ব্যানার ফ্যাস্টুনে ভড়িয়ে ফেলেছে।

নান্না নামে এক বাসচালক বলেন, বিলাসবহুল নামি-দামি গাড়িগুলো ফেরিতে ওঠাতে গিয়ে নানান ক্ষতি হতো, তাই উত্তর বা দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মতো সব ধরনের গাড়ি এ অঞ্চলে চলাচল করতো না। ঢাকা-বরিশাল রুটে সাকুরা ও ঈগল পরিবহন কয়েকটি এসি গাড়ির সার্ভিস দিলেও বাকিরা নন এসি গাড়ি দিয়েই যাত্রী সেবা পরিচালনা করতো। আর মধ্যখানে গ্রিণলাইন যাত্রীসেবা দিলেও তারাও বন্ধ করে দেয়। তবে বর্তমানে গ্রিণলাইন, ইলিশ, সাকুরা, ঈগল, প্রচেষ্টা,গ্রীন সেন্টমার্টিন এক্সপ্রেসসহ ১০ টিরও বেশি কোম্পানি ঢাকা-বরিশাল রুটে বিলাসবহুল এসি বাস সার্ভিস দিতে যাচ্ছে। যা বরিশাল-ঢাকা রুটে নতুন মাত্রা যোগ করবে।  

তিনি আরও বলেন, এখন যারা বরিশাল-ঢাকা রুটে নতুন করে সার্ভিসে আসছে, তারা সবাই কুয়াকাটা পর্যন্ত রুট পারমিট চাচ্ছে। এতে করে কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন বাড়বে।

এদিকে বাস টার্মিনালে পূরাতন পরিবহন কোম্পানির সঙ্গে নতুন নতুন পরিবহন কোম্পানিগুলো তাদের কাউন্টার সাজিয়ে নিচ্ছে। এ তথ্য জানিয়ে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের দপ্তর সম্পাদক অমল চন্দ্র দাস বলেন,পদ্মাসেতু উদ্বোধনের খবরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টার্মিনালের চেহারা পাল্টাতে শুরু করেছে। নতুন পরিবহনগুলো যেমন তাদের কাউন্টার গুছিয়ে নিচ্ছে, তেমনি পুরাতন পরিবহনগুলোও নতুন করে সাজানো হচ্ছে। কাউন্টারগুলোর সামনে লাগানো নতুন স্টিকার, ব্যানার, ফ্যাস্টুনে বিভিন্ন রুটের প্রচার চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, নতুন প্রচারে দেখা গেছে, নতুন নতুন রুটের নাম। অর্থাৎ বাস কোম্পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রুটও বাড়ছে। যারমধ্যে বেশিরভাগই ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের, তবে দক্ষিন পূর্বাঞ্চলের অর্থাৎ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলাতেও সরাসরি বাস সার্ভিস চালানোর ঘোষণা দিয়েছে অনেক পরিবহন। সবমিলিয়ে ১০টির বেশি নতুন পরিবহন কোম্পানি, যারা টার্মিনালে প্রচার চালাচ্ছে।

যদিও কোনো নতুন কোম্পানি জেলা বাস মালিক গ্রুপের সঙ্গে এখনও অফিসিয়ালি যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে। তিনি বলেন, পদ্মাসেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলে পরিবহন ব্যবসায় পরিবর্তন ও পরিবর্ধন ঘটবে এটা স্বাভাবিক। পদ্মাসেতু হয়ে বরিশাল-ঢাকা রুটে নতুন নতুন বাস চলাচল করবে এটা যেমন নিশ্চিত, তেমনি যত নতুন পরিবহন আসবে ততোই সড়কপথে যাত্রীসেবার মান উন্নয়ন হবে।

তিনি আরও বলেন, টার্মিনালে কাউন্টার স্থাপনসহ কোনো কাজেই আমাদের বাধা নেই। তাই নতুন পরিবহনগুলো তাদের মতো প্রচার চালাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২২
এমএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।