ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শিক্ষকের গলায় জুতার মালা: সামাজিক মাধ্যমে চলছে প্রতিবাদ

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
শিক্ষকের গলায় জুতার মালা: সামাজিক মাধ্যমে চলছে প্রতিবাদ শিক্ষকের গলায় জুতার মালা

ঢাকা: নড়াইলে এক কলেজ অধ্যক্ষকে পুলিশের সামনে গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় ক্ষোভ চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

প্রতিবাদকারীদের প্রশ্ন, পুলিশের সামনে কী করে একজন শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানো হলো?  

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ছে রাজপথেও।

আগামী সোমবার (২৭ জুন) বিকেলে ঢাকার শাহবাগে এ ঘটনায় একটি প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকা হয়েছে।

সেই সমাবেশের সংগঠক রবীন আহসান বলেন, শিক্ষক নির্যাতনের ঘটনায় সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। ওই ঘটনায় শিক্ষকের কোনো ভূমিকাই নেই। উনাকে না বাঁচিয়ে পুলিশ তাকে বের করেছে। প্রশাসন যারা চালায় তারা কী চাইছে?
 
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক আরিফুজ্জামান তুহিন লিখেন, এই দেশে হিন্দুরা থাকতে চাইলে জিজিয়া কর দেন। আর হাতে হলুদ ব্যান্ড পরা শুরু করেন। সংখ্যালঘুর স্বাধীনতা একটা কথার কথা।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও লিখেন, শিক্ষার্থীদের কাছে এমন অপমান সহ্য করতে হয়-তাহলে সাধারণ শিক্ষার দরকার নেই। এই জাতির জন্য বিজ্ঞান, মেডিকেল সায়েন্স শেখার দরকার নেই। অর্ধেক নারী ঘরে থাক, যেমনটি আফগানিস্তানে আছে। বাংলাদেশ এই অগ্যস্ত যাত্রার দিকেই আছে।

কলেজ অধ্যক্ষকে আটক করা প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে নড়াইল সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শওকত কবীর বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ কোনো ধর্ম অবমাননা করেননি। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কথাও ঠিক নয়। সেদিন তাকে নিরাপদে বের করা হয়েছিল। যেহেতু তিনি অপরাধ করেননি, তার বিরুদ্ধে মামলা করারও বিষয় নেই।

পুলিশের সামনে জুতার মালা পরানোর ঘটনা অস্বীকার করে তিনি বলেন, জুতার মালা পরানোর কোনো ঘটনা আমি দেখিনি। সেরকম কিছু আমার জানা নেই।

ওই শিক্ষকের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্ন করলে ওসি বলেন, উনি আমাদের এরকম কিছু বলেননি, বললে নিশ্চয়ই নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আটক ছাত্রকে গ্রেফতার করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়ে ওসি বলেন, সে এখন হাজতে আছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।

উল্লেখ্য, বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সমালোচনায় থাকা ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে ফেসবুকে নড়াইলের কলেজের এক ছাত্র পোস্ট করেন।  

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৭ জুন নড়াইলের ওই কলেজের ছাত্র পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু ছাত্র তাকে সেটি মুছে ফেলতে বলেন।

ওই সময় ‘অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন’ এমন কথা রটানো হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদেরও সংঘর্ষ বাঁধে।

ওই সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজের ছাত্র ও স্থানীয়রা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন।  ওই ঘটনার কিছু ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে আসে, যাতে পুলিশের উপস্থিতিও দেখা যায়। এ ঘটনায় পরে পুলিশ ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই যুবককে গ্রেফতার করে।

এই ঘটনার পর থেকে ওই অধ্যক্ষ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না। জানা গেছে, ওই শিক্ষক আতঙ্কে বাড়িতে থাকছেন না।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
এনবি/ইআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।