ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মা সেতু: এখন ছুটির দিন মানেই বাড়ি ফেরা

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেণ্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২২
পদ্মা সেতু: এখন ছুটির দিন মানেই বাড়ি ফেরা

মাদারীপুর: দক্ষিণাঞ্চলের করিডর খ্যাত বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ১০ দিন আগেও ছুটির দিনে অর্থাৎ শুক্র ও শনিবারকে সামনে রেখে গ্রামের বাড়িতে ফেরার ভোগান্তি দেখা গেছে সাধারণ মানুষের। পরিবারের সঙ্গে একটু সময় কাটিয়ে প্রফুল্ল মনে আবার কর্মস্থলে যোগ দেওয়া।

তবে নৌরুটের ভোগান্তির চিন্তা মাথায় রেখে অনেকেই বাড়ি ফিরতে নানা চিন্তা-ভাবনা করতেন। মাসে একবারের জায়গায় একাধিকবার বাড়ি ফেরার কথা ভাবতেন না।  

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর প্রথম শুক্রবার আজ ১ জুলাই। এই ছুটির দিনে দক্ষিণাঞ্চলের মাদারীপুরে অসংখ্য কর্মজীবীদের নিজ বাড়িতে দেখা গেছে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এখন বাড়ি ফিরতে কোনো বাধা নেই। আমাদের মতো দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মানুষের ঘরে ফেরার ভিড় দেখা গেছে পরিবহনে। সবাই বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছে। শনিবার বিকেল বা রোববার খুব ভোরে আবার ঢাকায় পৌঁছে অফিস করবেন তারা।

এদিকে শুক্রবার সকাল থেকেই ভাঙ্গা-যাত্রাবাড়ী এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের বেশ চাপ দেখা গেছে। মহাসড়কের টোলপ্লাজার কাছে দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হয়। ঢাকা থেকে মাদারীপুরগামী একাধিক পরিবহনের চালকরা জানান, শুক্রবার বাড়ির উদ্দেশে যাওয়া যাত্রীদের সংখ্যা বেশি। বিশেষ করে যারা ঢাকায় চাকরি করেন, তারা ছুটি কাটাতে বাড়ি যাচ্ছেন। পদ্মা সেতু না থাকলে শুধু শুক্রবারের ছুটি কাটাতে বাড়ি ফেরা মানুষের তেমন চাপ ছিল না। পদ্মা সেতু বাড়ির সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ সহজ করে দিয়েছে।

মো. আজিজুল মুন্সী নামে শিবচরের এক ব্যক্তি বলেন, শুক্রবার ছাড়া তেমন ছুটি পাই না। আগে শুক্রবারের দিন ঢাকায় নিজের রুমে নিরানন্দ সময় কাটাতে হতো। পদ্মা সেতু চালুর পরেই আজকের শুক্রবার নিয়ে অনেক আগ্রহে ছিলাম। বাড়ি ফিরতে হবে। আগে ঢাকা টু বাড়ি ৪/৫ ঘণ্টার দূরত্ব ছিল। একই সঙ্গে যাত্রা পথের নানান ধকল তো আছেই। কিন্তু আজ যেন নিমেষেই বাড়ি চলে এলাম।

তিনি আরও বলেন, ভোরে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে বাড়িতে এসে সবার সঙ্গে সকালের নাস্তা করা যায়। এখন মন চাইলেই বাড়ি আসতে পারবো।

আবির হাসান নামে ভাঙ্গার এক ব্যক্তি বলেন, ঢাকা থেকে আমার বাড়ি এখন এক সড়কের পথ। গাড়ি থেকে নেমেই বাড়ির পথ। কোনো ভোগান্তি নেই। পদ্মা পার হওয়ার টেনশন নেই। রাত হয়ে যাওয়ার উৎকণ্ঠা নেই। এখন ছুটির দিন মানেই বাড়ি চলে আসা।

মো. শাহজাহান বলেন, বাড়ি ফেরার আনন্দই আলাদা। এখন আর ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে না। ঢাকা থেকে এক বাসেই বাড়িতে পৌঁছাতে পারছি।

মো. সোহাগ হাওলাদার নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমার প্রতি সপ্তাহেই ঢাকা যেতে হয় ব্যবসার কাজে। ঢাকা থেকে সন্ধ্যার আগেই ঘাটে এসে পৌঁছানোর যেন চিন্তা থাকতো এখন তা আর নেই। কাজ সেড়ে রাতেও রওনা দিয়ে বাড়ি ফিরা যায় এখন।

গত ২৫ জুন উদ্বোধন হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। উদ্বোধনের পর শুক্রবার (১ জুলাই) প্রথম সরকারি ছুটি। ঢাকায় চাকরিজীবী অসংখ্য মানুষ ছুটির দিনে বাড়ি ফিরে আসছেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে। তাদের ভাষ্য, পদ্মা সেতুর ফলেই আজ প্রতি সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের মুখ দেখতে পারবো!

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।