ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যায় ধান-সবজির ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক

মেহেদী নূর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যায় ধান-সবজির ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: টানা কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জমি তলিয়ে যাওয়ায় ফসল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সংকট দেখা দিয়েছে পশু খাদ্যেরও।

বন্যার পানি কিছুটা নামতে শুরু করলেও দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকায় ফসলের গোড়া পচে যাওয়ায় এসব ফসল আর টিকবে না।

দিশেহারা কৃষক পরিবারগুলো ঘুরে দাঁড়াবার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ৯ উপজেলার কৃষি জমির কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলা সদর, নাসিরনগর, নবীনগর, সরাইল ও বিজয়নগর উপজেলায়। এসব এলাকার আউশ ও বোনা আমন ছাড়াও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় এবার আউশের আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। সবজি আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৪৯৫ হেক্টর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বোনা আমনের আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৯ হাজার ৫৭০ হেক্টর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।  

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মোবারক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বন্যার আগেই ছয় কানি ধানি জমি রোপণ করেছিলাম। প্রতি কানিতে ছয় হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। আশা করেছিলাম ফলনও ভাল হবে। তবে আকস্মিক বন্যায় সব জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নামতে শুরু করলেও ধানের গোড়া পচে যাওয়ায় এই ফসল কাজে লাগবে না। আমরা কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। এর আয় দিয়েই আমরা সংসার চালাই।  

প্রবীণ কৃষক শাহেদ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ১৭ শতক জায়গার মধ্যে চাল কুমড়া, নয় শতকের মধ্য করল্লা, ১২ শতকের মধ্য পুঁইশাক লাগিয়েছিলাম। এখন সবগুলো সবজির জমিই পানির নিচে। ধীরে ধীরে সবগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। আমার তিনটি গাভী আছে। বন ও খর না থাকায় ঠিকমত খাবারও দিতে পারছি না। ইতোমধ্যে বাজারে আবার পশু খাদ্যর দামও বেড়ে গেছে।

কৃষক মজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমার ধানি জমিগুলো কিছুটা গুছিয়ে উঠছিল। এর মধ্যে হু হু করে পানি চলে আসছে। টানা দুই সপ্তাহ হইছে পানি তেমন কমে নাই। এর মধ্যে ধানের নিচের গোছাগুলোতে পচন ধরে যাচ্ছে। এখন সরকার যদি আমাদের ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করে তাহলে পরবর্তীতে কৃষিকাজ করতে পারব।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আফসানা হক সাথী বলেন, ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের প্রয়োজনী পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিক তৈরি করা হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরে ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বাংলানিউজকে বলেন, এখন সুনিদিষ্ট করে ফসলের ক্ষতি পরিমাণ বলা যাচ্ছে না। বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর প্রকৃত ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ শেষে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহয়তা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২২
আরএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।