ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

এক্সপ্রেসওয়ে রুটে পরিবহনের চাপ, নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, মাদারীপুর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২২
এক্সপ্রেসওয়ে রুটে পরিবহনের চাপ, নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া

মাদারীপুর: পদ্মা সেতু চালুর পর ‘যাতায়াত দুশ্চিন্তা’ ছাড়াই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ রওনা হচ্ছেন নিজ নিজ বাড়ি। দুশ্চিন্তা কমলেও ভোগান্তি কমেনি ঘরমুখো মানুষের।

নৌ যাত্রায় ভাড়াসহ নানা সমস্যা থাকলেও সেতু পার হয়ে বাড়ি ফেরায় তাদের শিকার হতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ খরচের।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যেতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। অভিযোগ উঠেছে, ঢাকা থেকে শিবচর যেতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত বাস ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের অনেকেই জানিয়েছেন, শুক্রবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে চারশ থেকে ৫০০ টাকা খরচ করে শিবচরের পাঁচ্চর ও সূর্য্যনগর পর্যন্ত যেতে পারছেন। অথচ সাধারণ সময় এত টাকা ভাড়া নয়।

তারপরও থেমে নেই বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে পরিবহনের চাপ রয়েছে ব্যাপক।

সকাল থেকে এ রুট হয়ে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক্সপ্রেসওয়েতে বাসের চাপ থাকলেও সংকট রয়েছে। বাড়তি ভাড়ার খড়্গ তো আছেই। ভাঙ্গা পর্যন্ত যেতে না হলেও যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের এ উপজেলা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এক্সপ্রেসওয়ের যেকোনো স্থানের জন্য একই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতুর সুফল সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে পরিবহন সংশ্লিষ্টরাই কেড়ে নিচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে পরিবহনের ব্যাপক চাপ দেখা গেছে। বেশিরভাগ বাসের গন্তব্য ভাঙ্গা পর্যন্ত। এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের যাত্রীরা পাঁচ্চর, সূর্য্যনগরসহ বিভিন্ন স্থানে নামছেন। ঈদ কেন্দ্র করে ছোট যানবাহনও বাড়তি ভাড়া আদায় করছে।

জানা গেছে, ভাঙ্গায় যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলাটি থেকে বরিশাল পর্যন্ত ভিন্ন বাসে করে যেতে হচ্ছে তাদের। সেখানে পরিবহন সংকট থাকায় এ ভিড়ের সৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল পর্যন্ত দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা থেকে আসা শিবচরের একাধিক যাত্রী জানান, রাজধানীর বাড্ডা থেকে শিবচরের পাঁচ্চর পর্যন্ত ৫০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে বাসে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া ২০০ টাকার কম। পাঁচ্চর স্ট্যান্ড থেকে কিছুটা দূরে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবহন খাতের এই নৈরাজ্য না বন্ধ হলে পদ্মা সেতুর সুফল পাবে না সাধারণ মানুষ।

পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সিন্ডিকেট নিয়ে অভিযোগ করেছেন এক যাত্রী। তার ভাষ্য, মালিক-শ্রমিকরা পরিকল্পনা করে ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলছেন। এখন দ্বিগুণ, তিনগুণ বাস ভাড়া নিচ্ছে তারা। সাধারণ সময় আবার আগের ভাড়ায় ফিরবে। তাদের শোষণ থেকে দেশের মানুষ রক্ষা পাচ্ছে না।

নাঈম নামে এক বাইকার জানান, তিনি সব সময় বাইক দিয়ে ঢাকা থেকে নিজের বাড়ি যাতায়াত করতেন। কিন্তু সরকার এবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় তা মান্য করে তিনি বাড়ি যাচ্ছেন। কিন্তু যাত্রা পথে দেখছেন দেশের একজন সাধারণ নাগরিকের প্রতি মুহূর্তে কীভাবে জুলুমের শিকার হচ্ছেন। তার দাবি, বাস মালিক-শ্রমিকরা আঁতাত করে মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধ করিয়েছে। এমনকি ফেরিতেও মোটরসাইকেল বন্ধ করার পেছনে তাদের হাত রয়েছে। যাত্রীদের গলা কাটার জন্য তারা এমন ডাকাতির পরিকল্পনা করেছে।

বাড়তি ভাড়া সম্পর্কিত অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলরত বাস কোম্পানিগুলোর মোবাইলে কল করা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে তারা কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কে গাড়ির চাপ রয়েছে উল্লেখ করে শিবচর হাইওয়ে থানার একটি সূত্র জানিয়েছে, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের টিম দায়িত্ব পালন করছে। পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা, পাঁচ্চর, সূর্য্যনগর যাত্রী ছাউনি, পুলিয়া, মালিগ্রাম, বগাইল টোল প্লাজাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের টহল রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়েতে যানজটসহ অপ্রীতিকর ঘটনা দমনে তারা নজরদারিও করছে।

শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মহাসড়কে দূরপাল্লার পরিবহনসহ ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ ব্যাপক। যাত্রা সহজ করতে হাইওয়ে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা মহাসড়কে রয়েছে।

বাংলাদেশ সময় : ১৮৩৬ ঘণ্টা, ৮ জুলাই, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।