ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

জোয়ারের পানিতে মেঘনার উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২২
জোয়ারের পানিতে মেঘনার উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য জোয়ারের পানি থাকলেও এই সময়ে স্থানীয় লোকজন চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। এছাড়া নদীতে জোয়ারের তোড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্লাবিত হয়েছে তীর সংলগ্ন ফসলি জমিও।

শুক্রবার (১৫ জুলাই) দুপুরে থেকে বিকেল পর্যন্ত কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ, কালকিনি, চরমার্টিন এবং মতিরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।

স্থানীয়রা জানান, মেঘনার তীরবর্তী এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের অতিরিক্ত পানি খুব সহজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে নদী ভাঙনসহ উপকূলীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ সময় কমলনগর উপজেলার কালকিনি, সাহেবেরহাট, পাটারীর হাট, চর ফলকন, চর মার্টিন, চর লরেঞ্চ ইউনিয়ন এবং রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চরগাজী, চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে জোয়ারের পানি উঠে পড়ে।

কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ এলাকার বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানি গত দিন থেকে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) এবং শুক্রবার সেই পানির পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। এতে নদীর তীর সংলগ্ন বসত বাড়িতে পানি উঠে পড়ে।

লিপি আক্তার নামে এক নারী বলেন, শুক্রবার দুপুরে পানি উঠতে শুরু করে বিকেল ৩টার দিকে পানি ঘরের ভেতর ঢুকে যায়। এতে শিশু সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তাই সন্তান নিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি। পানি নামলে ঘরে ফিরে যাব।

একই এলাকার বাসিন্দা আকলিকা আক্তার জানান, জোয়ারের পানিতে রান্নার চুলা তলিয়ে গেছে। প্রতিনিয়তই এমন পরিস্থিতির স্বীকার হতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়ার কথা জানান নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা।

নাছিরগঞ্জ এলাকার খোরশেদা বেগম নামে এক নারী বলেন, গত দুইদিন ধরে জোয়ারের পানি তাদের ঘরে ঢুকে পড়ছে। পানি ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর নামতে শুরু করলেও দুর্ভোগ থেকেই যায়।

চরমার্টিন এলাকার বাসিন্দা কোরবান আলী বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় পুরো উপকূলীয় এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করা না হলে তারা জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পাবেন না।

স্থানীয় সংবাদকর্মী আবদুর রহমান বলেন, টানা তিনদিনের জোয়ারের পানিতে কমলনগরের বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি এবং কাঁচা ঘরের বেশ ক্ষতি হয়েছে।

রামগতি উপজেলার বিছিন্ন দ্বীপ চর আবদুল্যা ইউনিয়ন বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন ফোনে বলেন, গত তিনদিন থেকে নিয়মিত দুপুরে তাদের ইউনিয়নটি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এতে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমিতেও জোয়ারের পানি উঠে বিকেলের দিকে নেমে যায়। আরও কয়েকদিন এমন পরিস্থিতিতে থাকতে হতে পারে বলেও জানান তিনি।

কমলনগরের চর কালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফ উল্যা হেলাল বাংলানিউজকে বলেন, জোয়ারের পানি নামার সময় উপকূলে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। এতে অনেকের বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।