ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিএনজি গ্যাস স্টেশনে সরবরাহ বন্ধে দুর্ভোগ

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
সিএনজি গ্যাস স্টেশনে সরবরাহ বন্ধে দুর্ভোগ

মৌলভীবাজার : চলতি মাসের নির্ধারিত বরাদ্দ শেষ হওয়ায় জেলার তিনটি সিএনজি গ্যাস স্টেশনে সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এতে সিএনজিচালিত বাহনগুলোর মালিক ও যাত্রীরা পড়েছেন ব্যাপক অসুবিধায়।

জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী চলতি মাসের গ্যাস বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মৌলভীবাজার শহরের কুসুমবাগ এলাকার মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশন, শহরের শমসেরনগর রোডের এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং রাজনগরের ডেলটা সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশন। জালালাবাদ গ্যাস টিএনটি সিস্টেম লিমিটেডের আওতায় রয়েছে এ তিন স্টেশন।

সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনের মালিকরা বলছেন, শুধুমাত্র মৌলভীবাজারের স্টেশনগুলোর বিরুদ্ধে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ এ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের স্টেশনগুলো বরাদ্দ পাচ্ছে।

সিলেট বিভাগের ৫৪টি স্টেশনের মধ্যে মৌলভীবাজারের এ তিনটির বিরুদ্ধে কী কারণে এমন ব্যবস্থা তারা নিয়েছে, মালিকরা বলতে পারবেন না। তবে, তারা আশা করেন দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

রোববার (২৪ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে গ্যাস স্টেশনগুলো খালি পাওয়া গেছে। কর্মচারীরা জানান, শনিবার (২৩ জুলাই) পর্যন্ত গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন ছিল। কিন্তু আজ তেমন কোনো ভিড় নেই। কারণ, গ্রাহকরা অনেকেই জেনে গেছেন, স্টেশনগুলোয় গ্যাস পাওয়া যাবে না।

স্টেশন মালিকদের অভিযোগ, তারা বরাদ্দ বাড়াতে বারবার আবেদন করার পরও তা করছে না জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গ্যাস না পাওয়ায় এতে হাজার হাজার চালক ও মালিক আয় করতে পারছেন না। তারা মানবেতর জীবন পার করছেন। সড়কে যানবাহনগুলো দাঁড়িয়ে থাকে। যাত্রীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সত্ত্বাধিকারী ইফতেখার আহমেদ বলেন, ১ লাখ ৬২ হাজার ২৪০ কিউবিক মিটার বরাদ্দের চুক্তির মাধ্যমে আমি ২০১৪ সালে স্টেশনটি চালু করি। ওই সময়ে যানবাহনের সংখ্যার জন্য এ বরাদ্দ সঠিক ছিল। এখন প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। যানবাহন কয়েকগুণ বেড়েছে। চাহিদাও প্রায় দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বরাদ্দ আরও বাড়াতে ২০১৫ সাল থেকে কিছুদিন পর পর আবেদন করছি। কিন্তু বরাদ্দ বাড়ানো হয় না। ফলে গত ১৮ জুলাই গ্যাস বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হয়ে গেলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

শহরের শমসেরনগর রোডের এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৮ হাজার কিউবিক মিটার। ২০ জুলাই দুপুরে বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় তারাও সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সত্ত্বাধিকারী ফরহাদ আলী ইমন জানান, বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনিসহ সিলেট বিভাগের সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনের মালিকরা ৫০০ টাকা দিয়ে ফরম কিনে আবেদন করেন। দ্বিতীয় সপ্তাহে আমাদেরকে জানানো হয় বরাদ্দ বাড়ানো হবে না।

অন্যদিকে রাজনগর উপজেলার একমাত্র ডেলটা সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬২ হাজার ২৪০ কিউবিক মিটার। বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে তারাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

স্টেশনগুলো ছাড়া মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল রোডে মাজ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশন চালু রয়েছে। কিন্তু গ্রাহকের চাপ নিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। সিএনজি অটোরিকশা, গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত যানবাহনের কারণে এ দুটি স্টেশনে প্রতিদিনই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যানবাহন চালক ও স্টেশনের কর্মরত স্টাফদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদও হচ্ছে।

কী কারণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের সিলেট ও মৌলভীবাজারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিছু তথ্য দেন। তারা বলেন, সরকার নির্ধারিত লোড আমাদেরকে মেনে চলতে হবে। সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া স্টেশনগুলোয় ২০ জুলাই বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হয়েছে। এর আগে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সতর্ক করা হয় সরবরাহের ব্যাপারে। তারা সতর্কতা অবলম্বন না করায় সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তারা জানান, বর্তমানে সরকার সবক্ষেত্রেই গ্যাস সরবরাহ সীমিত করছে। তাই এখন বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তবে চলতি মাস শেষ হলে পুনরায় তারা বরাদ্দকৃত গ্যাস পাবে।

বাংলাদেশ সময় : ১৫০০ ঘণ্টা, ২৩ জুলাই, ২০২২
বিবিবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ