ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি পুনঃনির্ধারণের দাবি স্কপের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি পুনঃনির্ধারণের দাবি স্কপের

ঢাকা: নিত্যপণ্যের দাম কমানো, শ্রমজীবীদের জন্য ভর্তুকি মূল্যে রেশন দেওয়া ও বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সব শ্রমিক কর্মচারীর মজুরি পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) স্কপ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

 

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২০ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় থেকেই সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান এবং আয়ের পরিমাণ কমেছে। তার বিপরীতে খাদ্যপণ্যসহ জীবনযাপনের সব উপকরণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে শ্রমজীবী মানুষের জীবনমানের অবনতি হয়েছে। গত ১৫ জুলাই ২০২২ জাতিসংঘের ৫টি সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে দেশের জনসংখ্যার ৭৩ শতাংশ প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার কেনার সামর্থ্য রাখে না এবং ৩২ শতাংশ মানুষ খাদ্য অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবনযাপন করছে। এই অবস্থায় শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে জ্বালানি তেলের মত মৌলিক পণ্যের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অর্থপাচারকারীদের প্রতিরোধের ব্যর্থতায় ডলারের দাম বেড়েছে, অযৌক্তিক মাত্রায় পরিবহন ভাড়া বেড়েছে। আর জ্বালানি তেল ও ডলারের মূল্য এবং পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চাল, ডাল, তেল, সব্জি, ডিমসহ প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য একক প্রতি ১৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে।  

আরও বলা হয়, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে, এমনকি জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে ব্যবসায়ীদের নিত্যপণ্যের মূল্য আরও বাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের ক্রয় ক্ষমতা করোনা পুর্ববর্তী অবস্থানের তুলনায় অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে। তাদের মধ্যে চুড়ান্ত খাদ্য অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে, যা এসডিজি বা মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার ঘোষণার সম্পুর্ণ বিপরীত এবং অগ্রহণযোগ্য।

সংগঠনটির নেতারা বলেন, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) নিত্যপণ্যের বাজারমূল্য বিবেচনায় ২০২০ সাল থেকে জাতীয় নিন্মতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আসছে। অবিলম্বে জাতীয় নিন্মতম মজুরি ঘোষণা এবং মজুরি বোর্ড গঠন করে সব শ্রমিক-কর্মচারীর মজুরি পুণঃনির্ধারণ করতে হবে।

স্কপ নেতারা আরও বলেন, ওএমএস বা টিসিবির ট্রাক সেল কার্যক্রম থেকে পণ্য সংগ্রহ করতে লাইনে দাঁড়িয়ে সময় পার হওয়ায় একজন শ্রমজীবী মানুষ অর্থ উপার্জনের কাজে যেতে পারে না। উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওএমএস-এর সাশ্রয় কার্যত কোনো উপকার করে না। তাই ওএমএস বা টিসিবির ট্রাক সেলের পরিবর্তে শ্রমজীবীদের জন্য ভর্তুকি মূল্যে রেশন চালু করতে হবে।

নেতারা চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, ছুটির বৈষম্য নিরষণসহ ন্যায্য দাবির চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবং দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, ১২০ টাকা মজুরি নিত্যপণ্যের বর্তমান বাজারমূল্যে একজন মানুষের পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন পূরণ করে না। ফলে কাজ করেও শ্রমজীবী পরিবারের পুষ্টিকর খাবারের নিশ্চয়তা থাকবে না তা অমানবিক এবং কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষা করতেও শ্রমিকের মজুরি উৎপাদিত পণ্যের মূল্যের সঙ্গেসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
আরকেআর/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।