ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

কেরানীগঞ্জে লুণ্ঠিত স্বর্ণ উদ্ধার, পুলিশসহ আটক ৮

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
কেরানীগঞ্জে লুণ্ঠিত স্বর্ণ উদ্ধার, পুলিশসহ আটক ৮ আটকরা ও পুলিশের সংবাদ সম্মেলন।

কেরানীগঞ্জ: ঢাকার কেরানীগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণের বার ডাকাতি মামলায় এক পুলিশ সদস্যসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন কবীরের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকস দল ঢাকা জেলার আশুলিয়া, সাভার, ডিএমপি এবং খুলনা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করে।

এসময় তাদের দেওয়া তথ্যমতে লুণ্ঠিত স্বর্ণের মধ্যে ৫১ ভরি ৬ রতি স্বর্ণ ও স্বর্ণ বিক্রয়ের নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়।

আটকরা হলেন- পুলিশ কনস্টেবল কামরুজ্জামান (৪২), শফিকুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩৮), মো. রায়হান (৩২), উত্তম মজুমদার (৩৬), জাকির হোসেন (৩৮), শরীফ (৩৬), আনন্দ পাল (২৭) ও নাহিদা নাহার মেমী।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান।

পুলিশ সুপার জানান, গত ২ জানুয়ারি সিংগাইর থানার গোবিন্দল জামটি বাজারের সোলাইমান জুয়েলার্সের মালিক মো. হাবু মিয়া তার দোকানের বিশ্বস্ত কর্মচারী বরুন ঘোষের মাধ্যমে ৮টি স্বর্ণের বিস্কুট (ওজন ৯৬ ভরি) তাঁতীবাজারের স্বর্ণের দোকানে বিভিন্ন গহনা তৈরির উদ্দেশ্যে পাঠান। দোকানের কর্মচারী বরুন ওই স্বর্ণ কোমরে গুঁজে অনুমান ৩টার দিকে মোটরসাইকেলে করে মানিকগঞ্জের সিংগাইর থেকে রওনা হন। বরুণ কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন জনি টাওয়ার সংলগ্ন সাজেদা হাসপাতালের গলির রাস্তায় মোটরসাইকেল রেখে অটোরিকশা ও নৌকায় করে বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে তাঁতিবাজার স্বর্ণের দোকানে যায়। তাঁতিবাজারের স্বর্ণের দোকান বন্ধ থাকায় কর্মচারী বরুন ঘোষ ওই স্বর্ণগুলি নিয়ে পুনরায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন জনি টাওয়ার সংলগ্ন সাজেদা হাসপাতালের গলির রাস্তায় মোটরসাইকেলের কাছে আসা মাত্র আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ডাকাতচক্রের সদস্যরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পুলিশের পোশাক পরে ও নিজেদের পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে বরুনের কাছে অবৈধ মালামাল আছে এই অভিযোগে তাকে জোরপূর্বক ডাকাতদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। ডাকাতরা তাকে গাড়িতে তুলেই তার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে এবং মারতে শুরু করে। একপর্যায়ে বরুনের কাছে থাকা উল্লেখিত ৮টি স্বর্ণের বার, স্বর্ণ চালানের কাগজপত্র ও নগদ তিন হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন ঝিলমিল এলাকার ফাঁকা স্থানে গিয়ে মাইক্রোবাস থেকে বরুনকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। বরুন বিষয়টি তাৎক্ষণিক মোবাইল ফোনে দোকান মালিক হাবু মিয়াকে জানায়। অতঃপর হাবু মিয়া বাদী হয়ে ৩ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার নাম্বার-১০।

এর ধারাবাহিকতায় পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান তাৎক্ষণিকভাবে ডাকাত চক্রকে চিহ্নিত করে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন। তদন্তের শুরুতে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটিকে শনাক্ত করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তারা পুলিশ পরিচয়ে ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত স্বর্ণ ও নগদ টাকা ডাকাতি করে থাকে বলেও জানা গেছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবির, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আর রশিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।