ঢাকা, সোমবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ধর্ষণ মামলার আসামি যুবলীগ নেতা বহিষ্কার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
ধর্ষণ মামলার আসামি যুবলীগ নেতা বহিষ্কার

পঞ্চগড়: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে (২০) একাধীকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন মিন্টুর বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে গোপনে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় তাকে যুবলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায়।

তিনি বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে সব আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধায় পঞ্চগড়ের বোদা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই তরুণী।

অভিযুক্ত মনোয়ার হোসেন মিন্টু দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম তিস্তাপাড়া গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে।

এদিকে একই দিন রাতে সাময়িক বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুবলীগের দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ মিঠু।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চিলাহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন মিন্টুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এতে করে সংগঠনের সাংগঠনিক সৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। কি কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে এবং কেন তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না তার জবাব চেয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে নোটিশ দেওয়া হয়। সেটি তিন দিনের মধ্যে উপজেলা যুবলীগ কার্যালয়ে দাখিল করার নির্দেশ দিয়ে সাময়িকভাবে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে দুই দিন অতিবাহিত হয়েছে। তার হতে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সময় রয়েছে জবাব দেওয়ার। এখনও তিনি কোনো জবাব দাখিল করেননি।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এক জেলায় বাড়ি হওয়ায় মনোয়ার হোসেন মিন্টুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর আলাপচারিতার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিভিন্ন সময় মিন্টু তাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেন। গত বছরের ১৭ এপ্রিল বাড়ির অন্য সদস্যদের অনুপস্থিতে মিন্টু ভুক্তভোগীর বাসায় দেখা করতে যান। সেখানে তরুণীর অনিচ্ছা সত্বেও মিন্টু তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং ফোনে তার ভিডিও ধারণ করে রাখেন। এ ঘটনার পরে ভুক্তভোগী তরুণী মিন্টুকে একাধিক বার বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি ওই তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ করা অনেক কমিয়ে দেন।

এর মধ্যে ভুক্তভোগী পড়াশোনার জন্য ঢাকায় চলে যান। চলতি বছরের ২৫ জুন মিন্টু পুনরায় ঢাকা গিয়ে বিয়ের জন্য কাজী অফিসে নেওয়ার কথা বলে তরুণীকে অপরিচিত একটি বাসায় ডেকে নেন মিন্টু। সেখানে তাদের গোপন ভিডিও সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করেন। এরপর পুনরায় ভুক্তভোগী তরুণী বিয়ের জন্য চাপ দিলে গোপন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মিন্টু যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। পরে কোনো বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের অবহিত করে বোদা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী তরুণী।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে হলফনামার মাধ্যমে এফিডেভিটে গত ৩০ জুলাই বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন সাময়িক বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন মিন্টু।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।