ঢাকা: জাল নোট তৈরি ও বিক্রি করা চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারা হলেন—মো. মজিবুর রহমান (৩৫), মো. শাকিল রহমান ওরফে আ. রহমান (২৫), মো. রাসেল উদ্দীন ওরফে রাসেল সরদার (৩৪)। তাদের কাছ থেকে ১ কোটি ২৫ হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোট জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারদের কাছ থেকে ১টি ল্যাপটপ, ১টি কালার প্রিন্টার, প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন সাইজের ৫টি ডাইস, নিরাপত্তা সুতাসহ জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
চক্রটি ঈদ ও দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বাজারে জাল নোট ছাড়তো। প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট তৈরি করে আসছিল চক্রটি। জব্দ হওয়া বিপুল পরিমাণের জাল নোট দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন কুনিপাড়ায় শপিং ব্যাগে করে জাল টাকা হস্তান্তর করার সময় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট জব্দ করা হয়।
চক্রের সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তাদের আরেক সহযোগী মামুন (২৪) গাজীপুরের গাছা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে জাল টাকার কারখানা পরিচালনা করছেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সেই কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে মামুনকে পাওয়া যায়নি। তবে কারখানাটি থেকে ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোটসহ জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিবি প্রধান বলেন, তাদের নামে জাল টাকা তৈরির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা গত ১২ বছরে ধরে জাল টাকা তৈরি এবং বিক্রির ব্যবসা করে আসছিলেন।
গ্রেফতার মজিবুর রহমানের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তা জানান, জাল টাকা বাজারজাত করতে দেশে ১০-১৫টি কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুরো ১ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোটের বান্ডিল মান ভেদে ১০-১৫ হাজার টাকায় কিনে নিতো জাল নোট তৈরি করা চক্রের কাছ থেকে। চক্রটি মাসে ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা মূল্যমানের জাল নোট তৈরি করে আসছিল। জব্দ হওয়া জাল নোট দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে তৈরি করেছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, এর আগেও আমরা জাল টাকা তৈরির চক্রের একাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন জেলে গিয়েও তারা বাইরে থাকা চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। জেল থেকে বের হয়ে আবার আগের ব্যবসা শুরু করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২
এজেডএস/এমজেএফ