ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২২
ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু

রাজশাহী: ঢাকে পড়েছে কাঠি। ধূপের ধোঁয়ায় মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে শহর ও গ্রামের প্রতিটি পূজামণ্ডপ।

শনিবার (১ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আগামী ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী। ওইদিন প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ শারদীয় দুর্গোৎসব।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বোধনের মাধ্যমে মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা থানে উঠেছে। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো রাজশাহী মহানগরী। আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব উদযাপনে মহানগরজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

হিন্দু শাস্ত্রের বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, এ বছর পৃথিবীর মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) এসেছেন। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে কৈলাশে (স্বর্গে) ফিরে যাবেন নৌকায় চড়ে। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় সায়াংকালে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে আজ উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হয়। এদিন সকাল থেকে চন্ডিপাঠে মুখরিত রয়েছে মহানগরীর সব মণ্ডপ।

আগামী রোববার (২ অক্টোবর) উৎসবের দ্বিতীয় দিন মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে ভোর সাড়ে ৬টায়। সোমবার (৩ অক্টোবর) মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৯টায় এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে বিকেল পৌনে ৫টায় এবং সমাপন হবে সাড়ে ৫টার মধ্যেই। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৬টায় শুরু হবে নবমী পূজা। পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হবে সকাল সাড়ে ১০টায়। পরদিন বুধবার (৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টায় মহাদশমী পূজা আরম্ভ হবে। সকাল ৮টায় পুষ্পাঞ্জলি এবং পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের মধ্যে। সন্ধ্যা আরাত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ শারদীয় উৎসবের।

রাজশাহী মহানগর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, মহানগরীজুড়ে এখন সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সবাই দুর্গাপূজার উৎসবের আমেজে মজেছেন। রাজশাহীতে অন্যান্যবারের চেয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্বিগুণ করা হয়েছে। এতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা খুশি।

হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি তপন কুমার সেন বাংলানিউজকে জানান, রাজশাহীতে এ বছর ৪৫০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন হচ্ছে। এরমধ্যে মহানগরীতে রয়েছে ৭৬টি মণ্ডপ ও ৯টি উপজেলায় ৩৭৪টি। এরমধ্যে রাজশাহীর পবা উপজেলায় মণ্ডপ রয়েছে ১৮টি, গোদাগাড়ী উপজেলায় ৩৯টি, তানোর উপজেলায় ৬০টি, মোহনপুর উপজেলায় ২২টি, বাগমারা উপজেলায় ৮০টি, দুর্গাপুর উপজেলায় ১৭টি, পুঠিয়া উপজেলায় ৫২টি, বাঘা উপজেলায় ৪৬টি, চারঘাট উপজেলায় ৪০টি। এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সর্বত্র আনন্দ-উৎসবেই শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করা হচ্ছে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, শারদীয় দুর্গাপূজা সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদযাপনের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও প্রতিটি মণ্ডপে দায়িত্ব পালন করছেন। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করেছেন। কোনো জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে নিকটস্থ পুলিশ ফাঁড়ি, থানা অথবা তাৎক্ষণিকভাবে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২২
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।