ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

রায়পুরার মেঘনায় গরুবাহী ৫ ট্রলারে ডাকাতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২২
রায়পুরার মেঘনায় গরুবাহী ৫ ট্রলারে ডাকাতি প্রতীকী ছবি

নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে গরুবাহী পাঁচটি ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে। এসময় ডাকাতরা অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যবসায়ীদের মারধর করে ১০ থেকে ১২ জনকে আহত করে।

 

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রায়পুরা উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের সদাগরকান্দি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার দুর্গারামপুর নৌ সীমানার মধ্যবর্তী এলাকার মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।  

এ সময় তাঁরা গরু ব্যবসায়ী ও নৌকার যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ কোটি টাকা, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রায়পুরা ও নবীনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল নিজের এলাকায় পড়েনি বলে দাবি করে দায় এড়িয়ে গেছে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন- মির্জারচর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী শফিক (৩৬), সৈকত (৪০), জিতু (৩৮) ও শক্কু (৪২) এবং ট্রলারের মাঝি আক্তার হোসেন (৪০), রায়পুরার চানপুর ইউনিয়নের সদাগরকান্দি গ্রামের মো. মওলা মিয়া ছেলে মহসীন মিয়া (১৮) ও সামসু মিয়ার ছেলে নাসির মিয়া (৩০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নবীনগরের বাইশমৌজা এলাকায় প্রতি মঙ্গলবার গরুরহাট বসে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত ব্যাপারী ওই হাটে যান। কেউ কেউ গরু বেচতে নিয়ে যান, কারও কারও কাছে থাকে গরু কেনার নগদ টাকা। মঙ্গলবার সকালে রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর ও নিলক্ষ্যার দুটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুরের তিনটি গরুবাহী ট্রলার বাইশমৌজা হাটে যাচ্ছিল। পাঁচটি নৌকায় ২০০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। তাঁদের প্রায় সবাই গরু ব্যবসায়ী। এ সময় ট্রলারগুলো সদাগরকান্দি লঞ্চঘাটের কাছাকাছি যাওয়ার পর দুটি স্পিডবোট নিয়ে আট-নয়জন মুখোশধারী ডাকাত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ইঞ্জিনচালিত নৌকায় অতর্কিত হামলা চালায়। পরে স্পিডবোট থেকে ট্রলারে উঠে অস্ত্র ঠেকিয়ে নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এক মাঝিসহ পাঁচ ব্যবসায়ীকে আহত করে তারা।

মির্জাচর ইউপি সদস্য মহরম আলী জানান, মির্জাচর ইউনিয়নের শান্তিপুরের ব্যবসায়ীদের গরুবাহী একটি ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে। অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যাপারীদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতদল। এ সময় টাকা নিতে না পারায় এক মাঝিসহ পাঁচ ব্যাপারীকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত করে তারা।

ডাকাতদের হামলায় আহত নাসির মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নৌকায় থেকে তেল বিক্রির ব্যবসা করি। একটি স্পিডবোট কাছে এলে মনে করেছিলাম, তেল নেওয়ার জন্য আসছে। কিন্তু তারা ডাকাত ছিল আমরা বুঝতে পারিনি। ডাকাত দলটি আমাদের মারধর করে টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।

মির্জারচর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন বলেন, রায়পুরা উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তে মেঘনা নদীতে গরুবাহী ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাত সদস্যরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের মারধর করে। এ ঘটনায় এখনো ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান বলেন, মেঘনায় ডাকাতির খবর পেয়েছি। তবে ডাকাতির ঘটনাস্থল রায়পুরার সীমানার মধ্যে পড়েনি। পড়েছে পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার মধ্যে। এ বিষয়ে তাঁরাই আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দীন আনোয়ার বলেন, আমাদের নৌ পুলিশের মাধ্যমে জেনেছি, ঘটনাস্থল পড়েছে রায়পুরা থানার মির্জারচর নৌ সীমানায়। ভুক্তভোগী একজন আহত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেও এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। ফলে এ ঘটনায় আমাদের কিছুই করার নেই। যা করার রায়পুরা থানাকে করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।