ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পর্যটকে ভরপুর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, তবে আশানুরূপ নয়

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২২
পর্যটকে ভরপুর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, তবে আশানুরূপ নয়

কক্সবাজার: ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকটা শ্রীহীন হয়ে পড়েছে সমুদ্র সৈকত। তাতে কি, ভাঙন ঠেকাতে ফেলা বালুভর্তি জিও ব্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে সৈকতের সৌন্দর্য অবলোকনে ব্যস্ত হাজারো পর্যটক।

আর সবার চোখের সামনে সাগরের লোনা জলে ডুব দিল অস্তমিত সূর্য।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে এমন দৃশ্য দেখা গেল বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে। যে দৃশ্য রাঙিয়ে গেল হাজারো পর্যটকের মন।

শুধু লাবনী পয়েন্ট নয়, পূজার ছুটি উপলক্ষে সৈকতের সীগাল, সুগন্ধা, কলাতলীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকদের ভীড় ছিল। পর্যটকের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।

সমুদ্রসৈকত ছাড়াও মেরিনড্রাইভ ধরে ইনানী, হিমছড়ি ও দরিয়ানগর সৈকতে ছুটছে পর্যটকরা। এ ছাড়া রামু বৌদ্ধ বিহার, চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও নিভৃতে নিসর্গ এবং শৈলদ্বীপ মহেশখালীতেও পর্যটক সমাগম ঘটেছে।  

তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, পূজার ছুটি আর সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবার হিসাবে পর্যটক সমাগম আশানুরূপ নয়।  

পর্যটন ব্যবসায়ী ডা. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সম্প্রতি বৈরি আবহাওয়ায় সমুদ্র উত্তাল থাকায় পর্যটক কম এসেছে। এ ছাড়া পদ্মা সেতু চালুর পর অনেকেই কুয়াকাটা ও সুন্দরবনের দিকে ছুটে ঝুঁকেছে। যে কারণে কক্সবাজারে আশানূরূপ পর্যটক আসেনি।  

আনন্দের কমতি নেই পর্যটকদের
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে সৈকতে ভ্রমনে আসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অদিতি বড়ুয়া বহ্নি। তিনি বলেন, মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি, সেই সুযোগে মামা-মামিসহ সবার সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে এলাম। সবকিছু মিলে অসাধারণ লাগছে। আজ সৈকতে অস্বাভাবিক ভীড় নেই। সবকিছুই সহনীয় পর্যায়ে, যেকারণে খুব ভালো লাগছে।  

‘এ পর্যন্ত অনেকবার আসা হয়েছে এখানে।  কিন্তু  সমুদ্র সৈকতের কারণে  ভ্রমনের জন্য কক্সসবাজারই সন্তানদের কাছে প্রিয় জায়গা। যে কারণে এখানে বারবার আসা হয়। আসলেই এই সমুদ্রকে বারবার দেখলেও মন ভরে না। ’ এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানালেন কুমিল্লা থেকে আসা পর্যটক দম্পতি আনোয়ার হোসেন ও  রোকসানা পারভীন।  

‘সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যার ঠিক পরের পরিবেশটা আমার কাছে অসাধারণ লাগে। বিশেষ করে সাগরের ঢেউ গর্জন করতে করতে সাদা জলরাশি তীরে আছড়ে পড়ার যে দৃশ্য, সেটি অভূতপূর্ব। আর এ সময় যারা সমুদ্রস্নান করেন, দূর থেকে মনে স্নান নয়, যেন ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালী করছে ‘এভাবে সৈকতের সৌন্দর্যের বর্ণনা দিলেন স্থানীয় বাসিন্দা রনজিত বড়ুয়া।

কক্সবাজার বিচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সদস্য সচিব ও পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক রায়হান উদ্দিন বলেন, কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনের জন্যে চিন্তাভাবনা চলছে।  

কক্সবাজার শহর ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে ৫০০ মতো হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক রাতযাপনের সুযোগ রয়েছে। এ সংগঠনের সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বাংলানিউজকে বলেন, তারকা মান ও মাঝারি হোটেলগুলোতে বেশিরভাগ কক্ষ ভাড়া হয়েছে। ছোটখাট রিসোর্ট ও কটেজগুলোতে কক্ষ ফাঁকা আছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলী পয়েন্টসহ আশপাশে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়েছে। তবে আমরা আশা করেছিলাম সমাগম আরও বেশি হবে।

তিনি বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের টিম সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। পাশাপাশি টহলও বাড়ানো হয়েছে।  

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন,পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো ও সেবা নিশ্চিত করার জন্য অংশীজনদের সঙ্গে আমরা কয়েক দফায় সভা করেছি। এছাড়াও পর্যটক হয়রানি বন্ধে জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম বীচে কাজ করছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২২
এসবি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।