ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিদ্যুতের চাহিদা কমলে লোডশেডিংও কমবে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২২
বিদ্যুতের চাহিদা কমলে লোডশেডিংও কমবে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ফাইল ছবি

ঢাকা: চাহিদা কমলে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।  

তিনি বলেছেন, আমরা জ্বালানি ঠিক মতো না পেলে এটা (লোডশেডিং) ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়।

জ্বালানি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ দরকার, সেই পরিমাণ অর্থ আমাদের বাজেটে নেই। আমাদের কাছে নেই। তবে তাপমাত্রা কমলে চাহিদা কমে যাবে। চাহিদা কমলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা করতে পারব।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অফিস সময় পরিবর্তন করা হলো, এখন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ। সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় পরিস্থিতি বেশি খারাপের দিকে যাচ্ছে না। খারাপের দিকে যাচ্ছে, এটা সত্যি কথা। আমাদের ধারণা ছিলো অক্টোবরের দিকে বিদ্যুতের চাহিদাটা কমে আসবে। কারণ তখন আবহাওয়াটা ঠান্ডা হয়ে যাবে। কমের মধ্যে আমরা এটা ম্যানেজ করতে পারব। আমরা জ্বালানি আনতে পারছি না, আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসে আছে।

নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের ৭ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, যেগুলো তেলে চলে। ১১ হাজার মেগাওয়াট রয়েছে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাকি সোলার বা বিদেশ থেকে আনছি। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের (বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা) সাড়ে ৩ হাজার/৪ হাজার মেগাওয়াট। পুরো সিস্টেমের মধ্যে ৫ হাজার মেগাওয়াট গ্যাসে চালাতে পারছি।

তিনি বলেন, আমরা মনে করেছিলাম, চাহিদা কমে আসবে। কিন্তু আবহাওয়ার যে অবস্থা, যে পরিমাণ গরম। চাহিদা আগের মতোই রয়ে গেছে। এটা একটা বড় বিষয়। আমি আশা করেছিলাম গ্যাসের দাম কমে আসবে বিশ্বব্যাপী, কিছুটা কমেছে স্পট মার্কেটে, তাও অনেক বেশি। যে গ্যাস ৫ ডলারে কিনতাম সেটা ২৮ ডলার হয়েছে। যেটা গত মাসের আগের মাসে ছিলো ৪৭ ডলার। কমার পরও আমার জন্য তো এটা বেশি। এছাড়া ডলারের দামও বেড়েছে।

বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, একটু ধৈর্য্য ধরা দরকার। গত মাসে বলছিলাম, অক্টোবর থেকে হয়তো আমরা লোডশেডিং থেকে বেরিয়ে আসবো।  

দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় এখন গ্যাস নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্পট মার্কেট থেকে যেটা নিতাম সেটা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।

লোডশেডিংয়ের কারণে সবার কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, গতকাল (১০ অক্টোবর দিনগত রাতে) আমার বাড়িতে রাত দেড়টার পর বিদ্যুৎ ছিলো না। সবাই ধৈর্য্য ধরেন, এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি। সামনের বছর আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের অভাবে দেখা দিতে পারে। এটা আমাদের কথা নয়, এটা জাতিসংঘের কথা।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কতটুকু সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারি। কৃষিতে সেচ ব্যবস্থাটা সচল রাখতে পারি, এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

গ্রামে কোথাও কোথাও ৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা জ্বালানি ঠিক মতো না পেলে এটা (লোডশেডিং) ম্যানেজ করা সম্ভব নয়। জ্বালানি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ দরকার, সেই পরিমাণ অর্থ আমাদের বাজেটে নেই। আমাদের কাছে নেই। সেই পরিমাণ অর্থ নিয়ে যদি ডলার কিনতে চাই, তবে ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। সেখানে আমরা নিয়ন্ত্রণ করছি।  

উল্লেখ্য, জ্বালানি তেলের সংকটে বিদ্যুৎকেন্দ্রে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সূচি করে লোডশেডিং দিচ্ছিলো সরকার। অফিস সময়েও আনা হয় পরিবর্তন। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জারি করা হয় বিভিন্ন নির্দেশনা। এরমধ্যেও গত কয়েকদিনে লোডশেডিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। লোডশেডিং হচ্ছে রাতভর।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১,২০২২
জিসিজি/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।