ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রতীকী কফিন নিয়ে তামাকবিরোধী মানববন্ধন 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২২
প্রতীকী কফিন নিয়ে তামাকবিরোধী মানববন্ধন  ছবি: শাকিল আহমেদ 

ঢাকা: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিতে প্রতীকী মরদেহের কফিন নিয়ে মানববন্ধন করেছে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান), অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) এবং মাদক বিরোধী সংগঠন ‘প্রত্যাশা’।

শনিবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

পরে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।  

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে বছরে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আইন সংশোধনে যত দেরি হবে তামাকজনিত মৃত্যু ততই বাড়তে থাকবে।  

বক্তারা আরও বলেন, তামাকের ব্যবহার হ্রাসে সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে খসড়া সংশোধনী প্রস্তুত, ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং অংশীজনের মতামত নেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের এই মহতি উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করতে নানাবিধ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি-তে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও পদক্ষেপসমূহ তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক ও অন্যান্য স্বার্থ থেকে সুরক্ষা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। বিশেষ করে এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ এ তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে সরকারকে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত থাকতে সুপারিশ করা হয়েছে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠির ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লক্ষ) তামাক ব্যবহার করে। দেশে তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতায় বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়, যা তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে অনেক বেশি। তামাক ব্যবহারজনিত এই ক্ষয়ক্ষতি এবং ভয়াবহতা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং এ লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল- এফসিটিসি’র সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০১৬ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের নির্দেশনা দিয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা; বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা; সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এ ধরনের সব পণ্য উৎপাদন, আমদানি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা ইত্যাদি।  

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিটিএফকে) সহায়তায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, টিসিআরসি, ডরপ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, নাটাব,  ধূমপান মাদক ও দুর্নীতি বিরোধী ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশনসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন মানববন্ধনে অংশ নেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫, অক্টোবর ১৫, ২০২২
এনবি/এসএ

 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।