বরগুনা: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বরগুনায় সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। নদ-নদীতে পানি বেড়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে উপকূলবাসীকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে সকাল থেকে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শুরু করেছে মাইকিং। জেলার ৬৪২টি আশ্রয় কেন্দ্র ও দুই শতাধিক সরকারি-বেসরকারি স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে।
রোববার দিনভর থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও মধ্যরাত থেকে তা বেড়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি অমাবস্যার কারণে বাড়তে শুরু করেছে বরগুনার পায়রা, বলেশ্বর এবং বিষখালী নদীর পানি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করাসহ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনার জন্য জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছে জেলা প্রশাসন।
সভায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (পিপিপি) উপ-পরিচালক বলেন, বেতাগী এবং বামনা উপজেলা ছাড়া জেলার বাকি চার উপজেলায় মোট ৮ হাজার ৪৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন।
আর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম জানান, ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ভেঙে গেলে দ্রুত মেরামত করার প্রস্তুতি আছে তাদের।
এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি এড়াতে বরগুনার প্রায় চার লাখ মানুষের জন্য ৬৪২টি সাইক্লোন শেল্টার (আশ্রয়কেন্দ্র) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও ২৫ মেট্রিক টন চাল, ১ হাজার কার্টুন শুকনা খাবার, বিস্কুট ৭০০ প্যাকেট, টিন ১৯০ বান মজুদ আছে। প্রয়োজনে আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে।
সোমবার সকালে বরগুনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে বরগুনার পাথরঘাটা এবং তালতলী উপজেলার সব ইউনিয়ন, বেতাগী উপজেলার এক-তৃতীয়াংশ ও সদর উপজেলার বদরখালী, ৭ নম্বর ঢলুয়া, আয়লা পতাকাটা ও ফুলঝুড়ি ইউনিয়নে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলায় বরগুনায় বেড়িবাঁধের বাইরে ও চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরে প্রাণ হারিয়েছেন জেলার দুই শতাধিক মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
এমএমজেড