পিরোজপুর: মৌসুমি ঝড়ে নিখোঁজ হওয়ার আড়াই মাস পর বাড়ি ফিরেছেন পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার আরোও ৪০ জেলে। দীর্ঘদিন পর নিখোঁজ জেলেরা বাড়িতে ফিরে আসায় তাদের স্বজনদের মনে বইছে আনন্দ জোয়ার।
বুধবার (০২ নভেম্বর) ভারত থেকে ফেরা জেলেদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহানুর রহমান শামীম।
শাহানুর রহমান শামীম বাংলানিউজকে জানান, মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বেনাপোল স্থলবন্দরে বাংলাদেশ কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে নিখোঁজ জেলেদের হস্তান্তর করে ভারতের মহিফিট ফুলতলী কোস্টাল থানা পুলিশ। এই জেলেরা এতোদিন ভারতের আশ্রয় শিবিরে ছিলেন। তাদের মধ্যে সাতজন পিরোজপুরের এবং বাকি ৩৩ জন বরগুনার পাথরঘাটার বাসিন্দা। উদ্ধার জেলেদের নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
ফেরত আসা জেলেদের মধ্যে পিরোজপুরের হচ্ছেন- ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের কাদের মাতুব্বরের ছেলে সাইফুল মাতুব্বর, আক্কাস মাতুব্বরের ছেলে রফিকুল মাতুব্বর, শাহজাহানের ছেলে বেল্লাল ও আবু জাফর, বেল্লালের ছেলে আব্দুল্লাহ, সেকান্দার আলী হাওলাদারের ছেলে মন্টু হাওলাদার এবং আব্দুর রশিদ শেখের ছেলে জামাল শেখ।
এছাড়া বরগুনার জেলেরা হচ্ছেন- বরগুনা সদর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল হাওলাদার, আফান হাওলাদার, বাবুল আকন, বিল্লাল হাওলাদার, জাকির হাওলাদার, জলিল মৃধা, জলিল মুন্সি, করিম হাওলাদার, হেলাল হাওলাদার, জয়নাল আবেদীন, সাব্বির হাওলাদার, নাঈম মুন্সি, শুকুর হাওলাদার, পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দা আব্দুস সালাম, সবুজ চাপরাশি, সোহাগ হাওলাদার, শাহীন হাওলাদার, সিরাজুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, ফিরোজ শিকদার, নাসির, নিজাম মোল্লা, রাজা মিয়া , হাসান শিকদার, নুরুজ্জামান মুন্সী, সোহাগ জোমাদ্দার, সোনা মোল্লা এবং তালতলী উপজেলার বাসিন্দা বশির বিশ্বাস, সজীব ফরাজী, কাদের হাওলাদার ও ফরহাদ হোসেন।
উদ্ধার হওয়া জেলে সাইফুল মাতুব্বর বলেন, আমরা গত ১৮ আগাষ্ট ঝড়ের কবলে পড়ে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরি। আমরা সাতজন দুই দিন ও দুই রাত সাগরে ভেসে থাকার পর ভারতের কাঁকড়া শিকারীদের সাহায্য চাইলে তারা আমাদের ট্রলারে করে বৈকণ্ঠপুর হাইস্কুল আশ্রায় কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানেই আমরা আড়াই মাস ছিলাম। তিনি দাবি করেন, বৈকণ্ঠপুর হাইস্কুল আশ্রায়কেন্দ্রে আরও ৪৯ বাংলাদেশি জেলে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ আগস্ট সাগরে হঠাৎ মৌসুমি ঝড়ের কবলে পড়ে পিরোজপুরের সাতটি ট্রালার বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায়। এতে দুই জেলে মারা যান ও সাত জেলে নিখোঁজ হন। বাকিরা প্রাণে বেঁচে যান। এদের উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠানো হয়।
পরে ২৪ আগস্ট ভারতীয় কোস্টগার্ড পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার এমভি আবদুল্লাহ-১ এর ১১ জেলেসহ অন্য এলাকার ৩২ জেলেকে উদ্ধার করে। এরপর তাদের ওই দিন রাতে মংলা বন্দরের কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের কাছে হস্তান্তর করে। ২৫ আগস্ট উদ্ধার ১১ জেলকে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য বন্দরের আড়ৎদার ও এমভি আবদুল্লাহ-১ এর মালিক মহসীন মেম্বর কোস্টগার্ডেব কাছ থেকে গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২২
এফআর