ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শহীদ নুর হোসেন দিবস বৃহস্পতিবার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২২
শহীদ নুর হোসেন দিবস বৃহস্পতিবার

ঢাকা: দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় নাম নুর হোসেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অনেক চড়াই উৎড়াই, আর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম রয়েছে।

সেই আন্দোলনে আত্মত্যাগ করে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন শহীদ নুর হোসেন।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) শহীদ নূর হোসেন দিবস। নুর হোসেনের এ মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারের পতন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে  আন্দোলন তার একটি বড় অংশ ছিল সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৭ সালের এদিনে তৎকালীন স্বৈরশাসক লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ নেতা নুর হোসেন শহীদ হন।

এরশাদের সামরিক স্বৈরশাসনের অবসানে গড়ে ওঠা রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৮৭ সালের ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়। ওই দিন এরশাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ রাজপথে নামে। রাজধানী ঢাকার রাজপথে স্বৈরাচার পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নূর হোসেন আত্মহুতি দেন।

সেদিন নুর হোসেন তার বুকে পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ লেখা স্লোগান ধারণ করে মিছিলে অংশ নেন। ওই মিছিলে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে (জিপিও’র সামনে) পুলিশ নুর হোসেনকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সঙ্গে সঙ্গে রাজপথে লুটিয়ে পড়েন তিনি। শহীদ নূর হোসেনের মহান আত্মত্যাগের এ দিবসটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ও বিরল ঘটনা। ওই দিন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) গণসংগঠন ক্ষেতমজুর সমিতির নেতা আমিনুল হুদা টিটোও শহীদ হন। রাজধানীর পুরানা পল্টনে পুলিশের গুলিতে টিটো নিহত হন।

শহীদ নূর হোসেনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে তৎকালীন স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। সর্বস্তরের মানুষ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে এবং চলমান আন্দোলন আরও বেগবান হয়। গড়ে ওঠে ছাত্র-জনতার রাজপথের দুর্বার গণআন্দোলন। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে শহর থেকে গ্রাম গ্রামান্তরে। গড়ে উঠা দুর্বার আন্দোলনের স্বৈরাচারী এরশাদের পতন ত্বরান্বিত থাকে। অব্যাহত লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ পদত্যাগ করেন।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো প্রতি বছর এদিবসটিকে যথাযথ মর্যদার সঙ্গে পালন করে এবং শহীদ নুর হোসেনকে স্মরণ করে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসের সাহসী শহীদ নূর হোসেনের আত্মত্যাগের দিবসটিকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে পালনের জন্য আওয়ামী লীগ ও এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২২
এসকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।