ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আত্মহত্যা নয়, হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল প্রান্তির মরদেহ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
আত্মহত্যা নয়, হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল প্রান্তির মরদেহ!

রাজশাহী: আত্মহত্যা নয়। উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপনের জন্য বাবা-মা, ভাই মিলে প্রায়ই শাসন করতেন।

তবে কোনো এক ঘটনায় একদিন মারধর করতে গিয়ে মারা যায়- হোসনে আরা প্রান্তি (২০)। এরপর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তারা এটিকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চায়। একপর্যায়ে বাবা, মা ও ভাই মিলে প্রান্তির মরদেহ বাড়ির বাইরের আমগাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন!

রাজশাহীর পুঠিয়ায় হোসনেয়ারা প্রান্তির (২০) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের প্রায় আট মাস তার মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ।  

পুলিশের দাবি, প্রান্তি আত্মহত্যা করেননি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বুধবার (৯ নভেম্বর) সকালে প্রান্তির বাবা হাসানুজ্জামান বাবু (৪৫), মা নাসরিন বেগম (৪০) ও ভাই নাসিমকে (১৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা সদরের গণ্ডগোহালী গ্রামের অধিবাসী।

রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়াদী হোসেন জানান, এরই মধ্যে তারা প্রান্তির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- আত্মহত্যা নয়, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ওই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রান্তির ভাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। তবে এখনো তার বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

ওসি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা বলছেন তাদের মেয়েটি বড় হওয়ার পর থেকেই উগ্র জীবনযাপন করতেন। এ কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করেন। এর একপর্যায়ে মেয়েটি মারা যান। এরপর তার মরদেহ বাইরের আমগাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। যেন সবাই ভাবে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

এর আগে, ৬ মার্চ পুলিশ তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ওই সময় এ ঘটনায় পুঠিয়া থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করেছিল পুলিশ। প্রান্তি গত বছর পরিবারের অমতে পালিয়ে গিয়ে পৌর এলাকার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে জিয়ারুল ইসলামকে বিয়ে করেন।  

কিন্তু পালিয়ে বিয়ে করায় উভয় পরিবার তাদের এই বিয়ে মেনে নেয়নি। হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে প্রাপ্তি বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। গত ৫ মার্চ রাতে বাবা, মা ও ভাই মিলে প্রান্তিকে হত্যা করে মরদেহ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন। তবে সবাই ভাবে প্রান্তি আত্মহত্যা করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।